তিনি বলেছেন, “বিএনপি ঘুমিয়ে আছে। সম্প্রতি একটা রিপোর্ট বেরিয়েছে বাংলাদেশে কত লক্ষ লোক মানসিক অবসাদে ভুগছেন। বিএনপি ওই দলের অন্তর্ভুক্ত। তারা তো নিজের ঘরই সামলাচ্ছে না। তারা মানসিক অবসাদে ভুগছে।”
দৈনিক ‘আমার দেশ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের নেতা জাফরুল্লাহ একথা বলেন।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পরের বছর তিন মাস অবরোধ-হরতাল চালিয়েও ব্যর্থ সরকারকে হটাতে বিএনপি ব্যর্থ হওয়ার পর দলটির আর সে ধরনের কোনো কর্মসূচি নেই; যদিও আওয়ামী লীগ স্বৈরশাসন বলে দাবি করে আসছে তারা।
এরপর আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির আন্দোলনের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর জাফরুল্লাহ চৌধুরীও বিএনপিকে চাঙা করতে নানা পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
মঙ্গলবার রাজধানী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে যে অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপিকে ‘অবসাদগ্রস্ত’ বলেন, সে অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ছিলেন।
বিএনপির নেতৃত্বের উদ্দেশে জাফরুল্লাহ বলেন, “আপনারা দাবি করছেন নির্বাচন। পরবর্তী নির্বাচনটা যদি ২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে না হয়ে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে হয়ে যায়, তার জন্য বিএনপি কী প্রস্তুত আছে?
“শুধু তাই নয়, বিএনপি তার কাউন্সিল করেছে, আজকে একবছর পার হয়ে গেছে। সিদ্ধান্ত ছিল এক নেতা এক পদ। এখানে উপস্থিত আছেন কেউ কেউ, এখনও দুই পদ দখল করে আছেন। যেখানে এত বড় নেত্রী, ছোট একটা সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারেন না, কী করে আশা করতে পারি।”
খালেদা জিয়ার উপর এখনও বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক মানুষের আস্থা থাকলেও বিএনপি এককভাবে ভোট করে ক্ষমতায় যেতে পারবে না বলে মনে করেন জাফরুল্লাহ।
“আমি বলতে চাই, বিএনপিকে বড় দলের অহমিকা ছেড়ে দিতে হবে। মওলানা ভাসানী ১৯৫৪ সালে যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন, সেই দায়িত্বটা খালেদা জিয়াকে পালন করতে হবে। সেই দায়িত্বটা কী? উনাকে সকল বিরোধী দলকে নিয়ে আন্দোলনে যেতে হবে। উনি যদি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বিকল্পধারার চেয়ারম্যান) বাড়িতে চা খেতে যান, তাতে উনার মান ক্ষুণ্ন হবে না, উনি যদি কামাল হোসেনের বাড়ি যান, তাতে মান ক্ষুণ্ন হবে না।”
জাফরুল্লাহ একথা বলার পর মিলনায়তনে উপস্থিত বিএনপি নেতা-কর্মীরা তুমুল করতালি দিয়ে তা সমর্থন জানান।
জাফরুল্লাহ এই ধরনের নানা পরামর্শ দিয়ে এলেও তার সব পরামর্শ রাখা সম্ভবপর হয় না বলে কিছু কাল আগে মন্তব্য করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে না নেওয়ায় ক্ষোভও জানান জাফরুল্লাহ।
খালেদা জিয়ার প্রতি পরামর্শ রেখে তিনি বলেন, “এটা দুঃখজনক উনি এখনও বিএনপির সাধারণ কর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন না। রাত ৯টায় থেকে উনার কাজ শুরু হয়।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়েও কথা বলেন জাফরুল্লাহ।
“শেখ হাসিনা ভারত বিজয়ে পরাজিত হয়েছেন। উনার কিছু অর্জন হয়নি। উনি যদি ছোট একটা কাগজ আনতে পারতেন যে সীমান্তে বিএসএফ আর মানুষ হত্যা করবে না, তা-ও হত।”
দলের কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের তালিকা প্রকাশ করার জন্য বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি দাবি জানান জাফরুল্লাহ।