আ. লীগ-জামায়াত ‘বন্ধুত্ব’ এখনও আছে: খালেদা

বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগই আগে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সখ্য গড়েছিল দাবি করে খালেদা জিয়া বলেছেন, তাদের সেই ‘বন্ধুত্ব’ এখনও রয়ে গেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2017, 07:53 PM
Updated : 9 April 2017, 08:17 PM

বিএনপিকে কোণঠাসা করতে আওয়ামী লীগ এখনও জামায়াতকে ‘ব্যবহার করে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

রোববার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিতদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন খালেদা জিয়া।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক প্রমাণে এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৬ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল দুটির অংশগ্রহণের তথ্য তুলে ধরেন বিএনপি নেত্রী।

তিনি বলেন, “এরশাদের সাথে আঁতাত করে আওয়ামী লীগ ’৮৬ সালে নির্বাচনে গিয়েছিল। আমরা যাইনি। তারা (আওয়ামী লীগ)তখন সঙ্গী খুঁজে পায় না। একলা গেলে খারাপ দেখায়, সেজন্য জামায়াতে ইসলামীকে সাথেনিয়ে নির্বাচনে গেল।

“এখন জামায়াতে ইসলামী রাজাকার খারাপ। তখন কিন্তু নিজামীসাহেবের (মতিউর রহমান নিজামী) সাথে মিটিং-টিটিংয়ের ফটো-টটোগুলো আছে, মওদুদ সাহেবওসাক্ষী আছে।”

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক। ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়া যে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন, সেখানে জামায়াতের তৎকালীন দুই শীর্ষ নেতা নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে রাখা হয়েছিল।

এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শুরু হওয়া যুদ্ধাপরাধের বিচারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত নিজামী-মুজাহিদের শাস্তি এরইমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে আন্দোলনের পাশাপাশি বিএনপির আহ্বানে সরকার পতনের আন্দোলনেও ছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে ২০১৩ সালে দশম সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে এবং তার পরের বছর সরকার পতনে খালেদার আন্দোলন সফলতার মুখ দেখেনি।

নিজের জোটসঙ্গী জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, “ওই সবছবিতে (এরশাদ আমলের) তারা কীভাবে মিটিং করছেন, কেউ সালাম করছেন, কেউ ঝুঁকে সালাম করছেন, নানারকমের অঙ্গ ভঙ্গির ছবি আছে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সখ্য কাদের বেশি ছিল? তাদেরছিল। এখনও আছে, এখনও বন্ধুত্ব ঠিকই আছে, সে যায়নি।

“বিএনপিকে হারানোর জন্য বাবিএনপিকে ‘ইয়ে’ করার জন্য তারা সময়মত ব্যবহার করে।”

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তার মত ছিল না বলে জানান খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, “নির্বাচনে যাওয়াটার ব্যাপারে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যারা ছিল তারা খুব বেশি আগ্রহী ছিল নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে।তারা বলল, নির্বাচনে যেতেই হবে, নির্বাচনে না গেলে ক্ষতি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।তখন তাদের কথা শুনে আমরা নির্বাচনে গেলাম।

“সেই নির্বাচনে যে ফলাফল বিএনপির- এটাকখনোই হতে পারে না। বিএনপিকে হিসাব করে আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে এত সিট দেবে।”

ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

এখন তাদের হটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “২০০৮ সালে এরা ক্ষমতায় এসেছে। আজকে১০ বছর হতে চলেছে। দেশের কী অবস্থা, অর্থনীতির কী অবস্থা? ব্যাংকগুলো ফোকলা করেদিয়েছে। কাজেই দেশ একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছে।

“সেজন্য আমরা মনে করি, বাইরে যারাআছেন, দেশকে ভালোবাসেন বুদ্ধিজীবীসহ অন্যরা, হকাররা, আসুন অন্যায়ের বিরুদ্ধেঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করি, দেশটাকে ঐক্যবদ্ধভাবে বাঁচাই। দেশটা বাঁচলে আপনারাবাঁচবেন, সম্মানের সাথে বাঁচবেন।”