‘চুক্তি বা সমঝোতার বিষয়ে জানার অধিকার আছে’

ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যেসব ‘চুক্তি ও সমঝোতা’ হয়েছে তা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এসব চুক্তি বা সমঝোতায় স্বার্থবিরোধী কোনো শর্ত আছে কি না তা জানার অধিকার দেশের মানুষের আছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2017, 09:37 AM
Updated : 8 April 2017, 09:37 AM

শনিবার দুপুরে ভারতের হায়দ্রাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে যখন শীর্ষ বৈঠক চলছে তখন ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, “আমরা চাইব, যা কিছু করছেন আপনারা, তা দেশের মানুষের কাছে প্রকাশ করতে হবে, আমাদেরকে জানতে দিতে হবে। এসব গোপন রাখলে চলবে না।

“প্রতিরক্ষা চুক্তি বা সমঝোতাসহ যেসব চুক্তি বা সমঝোতা আপনারা করছেন, আমাদের দেশের মানুষের জানার অধিকার আছে এই সব চুক্তিগুলোতে কি আছে, এই সব সমঝোতায় কি শর্ত আছে। দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো শর্ত আছে কিনা? এটা জানার ও দেখার অধিকার দেশের ১৬ কোটি মানুষের আছে। ”

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা, পরমাণু বিদ্যুৎ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট ও মহাকাশ গবেষণা, ঋণ সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, বর্ডার হাট স্থাপন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতায় এগুলো সই হয়েছে।

সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা নেওয়ার পর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধি সৌধে ফুল দিয়ে হায়াদ্রাবাদ হাউজে যান শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকের পরপরই শীর্ষ বৈঠক হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের দাবি এবং জঙ্গিবাদ দমনে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।

প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পর্কে মওদুদ বলেন, “চুক্তি বা সমঝোতা একই কথা। বিকজ ইট ইজ এ কমিটমেন্ট বিটুইন টু স্টেটস। সেজন্য বলব, এমন কিছু করবেন না, যাতে দেশের স্বার্থ হানি ঘটে। আমাদের দেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কোনো রকমের সমঝোতা দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

“আশা করি এমন কোনো শর্ত এই সমঝোতায় থাকবে না, যাতে করে আমাদের সেনাবাহিনী আরও দুর্বল হয়, তাদের দক্ষতা কমে যায়, তাদের সক্ষমতা কমে যায়। কোনো শর্ত এই সমঝোতায় থাকাটা উচিৎ হবে না।”

আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে মওদুদ বলেন, “আমরা সমঝোতার কথা বলছি, সংলাপের কথা বলছি। আমরা আলাপ-আলোচনা করে দেশে যাতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, যাতে জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পায়, আমরা একটা সমঝোতার মাধ্যমে এর সমাধান চাই। যদি এই সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বিএনপি, ২০ দল ও দেশের  ১৬ কোটি জনগণকে নিয়ে আন্দোলনের কোনো বিকল্প থাকবে না।”  

এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, কল্যাণ পার্টির শাহিদুর রহমান তামান্না, এনপিপি’র মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।