এত জঙ্গি আস্তানা কোত্থেকে আসছে, প্রশ্ন মোশাররফের

সিলেটে জঙ্গি আস্তানার অভিযান শেষ হতে না হতেই মৌলভীবাজারে আরও দুই বাড়ি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান দেখে প্রশ্ন জেগেছে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মনে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2017, 03:22 PM
Updated : 29 March 2017, 03:28 PM

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের সন্দেহ,প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর এবং সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির সঙ্গে এর একটা যোগসূত্র রয়েছে।

বুধবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় মোশাররফ বলেন, “জঙ্গি একটা শেষ হচ্ছে, আরেকটা শুরু হচ্ছে; কারণ জানতে চাই আমরা। আপনাদের গোয়েন্দা আছে, সরকারের এত শক্তি আছে, এত বাহিনী আছে।

“আপনারা যদি জঙ্গিদের নির্মূল করে থাকেন, আবার কিভাবে এগুলো এখানে খুঁজে পাচ্ছেন? জনগণ বলাবলি শুরু করেছে যে, ভারত সফরকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এগুলো করছেন কি না? এটা আজকে অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।”

গত বছর গুলশান হামলার পর টানা অভিযানে জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি করেছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

মাঝে বিরতি দিয়ে গত তিন সপ্তাহে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেটে সাতটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। সিলেটে সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রশংসাও করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সিলেটে অভিযান শেষ হওয়ার পরদিনই বুধবার ভোরে মৌলভীবাজারে দুটি এবং দুপুরে কুমিল্লায় একটি আস্তানায় অভিযান শুরু করে পুলিশ।

মোশাররফ বলেন, “একটা যেতে না যেতে আবার দেখছি আরেক জায়গায়, সিলেটের মৌলভীবাজারে দুটি জঙ্গি আস্তানা তারা না কি খুঁজে পেয়েছে।”

“প্রধানমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা, সেই গুলশানের ঘটনার পর আপনি বলেছিলেন, ‘আমরা এদেশ থেকে জঙ্গিবাদকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, আর জঙ্গি নাই’। এখন এগুলো কোথা থেকে আসছে, এটা জনগণের প্রশ্ন।”

জঙ্গিবাদের উত্থান দেখিয়ে সরকার বিদেশিদের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চাইছে বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার, যে দলটির বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ করে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

বর্তমান সরকারের ‘দুর্বলতার’ কারণে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ‘লীলাভূমি’তে পরিণত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ।

 

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সেগুনবাগিচার কচি-কাঁচার মেলা ভবনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল।

অনুষ্ঠান থেকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক দল প্রকাশিত ‘কমল’ নামে একটি বুলেটিনেরও মোড়ক উন্মোচন করে। এছাড়া জিয়াউর রহমানের ওপর একটি তথ্যচিত্রও দেখানো হয়।

অনুষ্ঠানটি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “কেন আমরা দেখতে পাই, ১৩ তলায় আগুন? উপরেও নয়, নিচেও নয়, যেই ১৩ তলায় বৈদেশিক মুদ্রার লেন-দেনের কার্য্ক্রম, সেই ১৩ তলায় কেন আগুন?

“আপনারা বলেছিলেন, চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফিরিয়ে আনব, যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করব। তদন্ত প্রতিবেদন হয়েছে, গোপন রেখেছেন। বিদেশিরা বলছে, ওই প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে অর্থ ফেরত দেবে না। এখন সরকারের পক্ষ থেকে বলছেন, আবার নতুন করে তদন্ত করব? এখন ১৩ তলায় আগুন। সকল প্রমাণাদি জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ তলা আগুনের পরপরই যখন মানুষের দৃষ্টি ওদিকে, তখন আবার জঙ্গির দিকে।”

অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। এই সরকার গুম-খুন করছে, হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপ করছে। এগুলোর অবসান করতে হবে, জনতার জয় হবেই।”

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক মীর সরফত আলী সপু, দলের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাহাবুদ্দিন মুন্না, লিটন মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।