কুমিল্লায় দু’দলের জন্যই সমান সুযোগ: ইসি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই প্রধান দলের জন্যই সমান ‍সুযোগ থাকছে বলে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2017, 12:27 PM
Updated : 28 March 2017, 01:03 PM

আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচন প্রধান দুই দলই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির তাগিদ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার একথা জানান ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দুই দলই বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। কমিশনের মেসেজ ক্লিয়ার, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। দুই দলই চায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, আমরা সবার জন্যে সমান সুযোগ তৈরি করব।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল ও সোমবার বিএনপি প্রতিনিধি দল দেখা করে।

এরপরই মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে কুমিল্লার ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরেন ইসি সচিব।

গত ২৫ মার্চ কুমিল্লায় সভায় সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলে এসেছিলেন, কোনো দলের প্রতি পক্ষপাত নেই ইসির

এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জেএসডি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন মেয়র পদে।

ক্ষমতাসীনরা অভিযোগ করছে, নিরপেক্ষতা দেখাতে গিয়ে ইসি ‘নিষ্ঠুর আচরণ’ করছে আওয়ামী লীগের প্রতি। বিএনপি বলছে, ক্ষমতাসীনরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে, স্থানীয় প্রশাসন ‘নির্লিপ্ত ভূমিকা’ পালন করছে।

আব্দুল্লাহ বলেন, “উভয় দলেরই কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো দেখা হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ কুমিল্লায় আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৭ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে।

“এসব বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করেছেন। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আওয়ামী লীগের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে- এ অভিযোগের বিষয়ে সচিব বলেন, “আচরণবিধি প্রতিপালন সবার জন্য সমান। দুপক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। কমিশন কারও প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছে না।”

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব।

“আমরা শতভাগ আশাবাদী। এই নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী মালামাল মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার বিষয়ে ইসি বেশ আন্তরিক।”

মাঠে ৪ হাজার আইন শৃঙ্খলা সদস্য

ইসি সচিব জানান, কুমিল্লায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা মাঠে তৎপর রয়েছে। আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর নির্দেশনাও রয়েছে।

“আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ হাজার ৮৩৬ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। ৩৬ জন নির্বাহী হাকিম ও ৯ জন বিচারকি হাকিম রয়েছে।”

এছাড়া ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থার সদস্য ও সাংবাদিকরা ভোট পর্যবেক্ষণে থাকছে।

সাংবাদিক কার্ড নিয়ে অব্যবস্থাপনা

ভোটের দুদিন আগেও মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে কোনো ধরনের কার্ড দিতে পারেনি ইসি।

এ পর্যন্ত ১০টি সংস্থার প্রায় ৪০০ জন ও গণমাধ্যমের পাঁচ শতাধিক সাংবাদিক নির্বাচনের দিন পর্যবেক্ষণে যাওয়ার জন্য ইসির পরিচয়পত্র নিতে আবেদন করেছে।

কিন্তু বিকাল ৪টা পর্যন্ত কমিশন তাদের কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি।

জানতে চাইলে ইসি সচিব আব্দুল্লাহ বলেন, “কমিশনের অনুমোদনের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। ভোটের এখনও একদিন বাকি রয়েছে। ভোটের আগের দিন পেলেও কোনো সমস্যা হবে না।”

অতীতে কখনও এ রকম অব্যবস্থাপনার মুখোমুখি হতে হয়নি।

সাংবাদিকদের গাড়ির স্টিকার যাতে অন্যরা ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়টিতে নজর রাখতে বলা হয়েছে বলে ইসি সচিব জানান।

“কমিশনের কাছে অভিযোগ এসেছে, অতীতে অনেক সময় সাংবাদিকদের গাড়িতে রাজনৈতিক দলের লোকজন থাকে। সাংবাদিকদের গাড়িতে যাতে সাংবাদিকরা থাকেন, অসাংবাদিকরা ব্যবহার না করে, সে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।”

৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনেও ভোটগ্রহণ হবে।