তিস্তা না হলে অন্য চুক্তি অর্থহীন: ফখরুল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হলে অন্য সব চুক্তি ‘অর্থহীন’ হয়ে যাবে বলে মনে করছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2017, 10:14 AM
Updated : 24 March 2017, 04:06 AM

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ফলপ্রসূ করতে হলে সবার আগে দুই দেশের অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে, যার অন্যতম হল পানি বণ্টন।

“তিস্তাই হচ্ছে এখন সবার আগে প্রধান সমস্যা। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানুষ আশা করেছিল, একটা সম্পর্ক তৈরি করে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আমরা পাব। শুধু তিস্তাই নয়, আমরা ৫৪টি নদীর কোনো ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি না। তিস্তার পানি চুক্তি যদি না হয়, তাহলে অন্য কোনো চুক্তি অর্থহীন হবে।”

দেশের ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে’ কোনো চুক্তি দেশের মানুষ মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।  

বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে তিস্তা চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ই তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তা আটকে যায়।

সাত বছর ধরে ঝুলে থাকা এই চুক্তি প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরেও হচ্ছে না বলে মঙ্গলবার ইঙ্গিত দেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

তিস্তা চুক্তি ঝুলে থাকায় সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা দর কাষাকষি করতে পারছি না এজন্য যে, আমরা নতজানু হয়ে আছি। বাংলাদেশে যারা সরকার চালাচ্ছেন, যারা দরকাষাকষি করছেন, তারা আগেই দুর্বল হয়ে নতজানু হয়ে আছেন। তারা বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে অন্য দেশের স্বার্থকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। সেজন্য আজ এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে ‘ঘরে বন্দি’ রেখে নিজের দলীয় প্রতীক নৌকার পক্ষে ‘একতরফা’ নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, “এটাই প্রমাণ করে, এ দেশে গণতন্ত্র নেই। একটি দল এবং তার সভাপতি তিনি রাষ্ট্রের পয়সায় হেলিকপ্টারে করে প্রত্যেকটি জনসভায় যাচ্ছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জনসভা করছেন এবং ক্যাম্পেইন করছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে চলছেন এবং গায়ের জোরে একতরফা ক্যাম্পাইন করছেন।”

সম্প্রতি গত তিন সাপ্তাহে বগুড়ার শান্তাহার, চট্টগ্রাম ও মাগুরায় আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর নৌকায় ভোট চাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “যেটা আগে করা দরকার, রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিতে হবে, তাদের সভা-সমাবেশ করতে দিতে হবে, স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে দিতে হবে। এখানে নির্বাচনটা অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে।”

জিয়া পরিষদের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের নেতৃত্বে সংগঠনটির নেতাদের নিয়ে জিয়ার কবরে ফুল দিতে আসেন বিএনপি মহাসচিব।

কবীর মুরাদ ছাড়াও সংগঠনের সহসভাপতি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক আবু তাহের, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ, অধ্যাপক আলী নুর রহমান ও অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।