জনগণের অজান্তে ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি নয়: মোশাররফ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে জনগণের অজান্তে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা চুক্তি হলে জনগণ তা মেনে নেবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2017, 03:52 PM
Updated : 18 March 2017, 03:52 PM

শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ হুঁশিয়ারি দেন।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে পত্র-পত্রিকার খবরের কথা তুলে ধরে মোশাররফ বলেন, “আজকে বলা হচ্ছে যে, এখানে নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি হবে। সরকার বলছে সমঝোতা হবে, আর ভারতের সরকার বলছে নিরাপত্তা চুক্তি হবে।

“আমাদের কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তার কোন বিষয়টি এখন স্পর্শকাতর হলো বা আমরা এমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি যেটাকে সরকার জনগণের কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জনগণকে না জানিয়ে, জনগণের অজান্তে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা চুক্তি হতে পারে না।’’

তিনি বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ছাড়া এমন কোনো জরুরি চুক্তি নেই, সেটা এখন হওয়া দরকার। বহুদিনের প্রত্যাশা তিস্তা চুক্তি, এই সরকার বার বার দেশের মানুষের সাথে এই চুক্তি নিয়ে প্রতারিত করেছে।

“যদি বাংলাদেশের সাথে কোনো চুক্তি হতে হয়, সেটা হবে কেবলমাত্র পানি চুক্তি তথা তিস্তা চুক্তি। অন্য কোনো চুক্তি দেশের মানুষ চায় না।”

আগামী ৭ এপ্রিল থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

শনিবার বিকালে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কঁচি কাঁচার মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়। অনুষ্ঠানে প্রয়াত মহাসচিবের বর্ণাঢ্য জীবন ইতিহাস তুলে ধরেন গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এম আল মামুন।

২০১১ সালের ১৬ মার্চ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা যান। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি ও খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে মানিকগঞ্জের পাঁচুরিয়ায় এবং ঢাকায় মিলাদ মাহফিল প্রভৃতি কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

মৃত্যুবার্ষিকীর দিন বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পাচুরিয়া গ্রামে প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন, ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ মোনাজাত হয় যাতে কয়েকশ নেতা-কর্মী অংশ নেন। এ সময় প্রয়াত মহাসচিবের স্ত্রী সাহেরা বেগম, ছেলে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবুল, খোন্দকার আখতার হোসেন জগলু, খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু, খোন্দকার আখতার হামিদ পবন, মেয়ে ডা. আখতারা খাতুন লুনা ও ডা. দেলোয়ারা বেগম পান্নাসহ আত্মীয়-স্বজনরা ছিলেন।

প্রয়াত মহাসচিবের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “খোন্দকার দেলোয়ার ছিলেন একজন বড় মাপের দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি বেঁচে থাকলে আজ ‘বলিষ্ট কণ্ঠে’ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলতেন, তিনি আজকে মানবাধিকারকে রক্ষা করবার জন্যে, তিনি আজকে মানুষের ভোটের অধিকারকে রক্ষা করবার জন্যে কথা বলতেন। আজকে এই দুর্দিনে খোন্দকার দেলোয়ারের অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের  সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জুয়েল, প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ড. খোন্দকার আকবর হোসেন বাবুল ও অ্যাডভোকেট খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু বক্তব্য দেন।