দেশকে অস্থিতিশীল করতেই নাগরিকত্ব আইন: মঈন

প্রস্তাবিত ‘নাগরিকত্ব আইন’ দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2017, 11:36 AM
Updated : 14 March 2017, 11:36 AM

মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিটি ধারা বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের সাথে ‘কনফ্লিক্ট অ্যান্ড কনফিউশন’ সৃষ্টি করেছে। কেন? উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের যে মৌলিক অধিকার সেটাকে ক্ষুণ্ন করে, এখানে আমাদের যে একটা ‘ন্যাচারাল ব্যালান্স’ সেটাকে ধ্বংস করে দিয়ে, এদেশকে অস্থিতিশীল করে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠি এদেশ শাসন করবে, অপশাসন করবে।

“ওই গোষ্ঠি এদেশের মানুষের সুযোগ-সুবিধা লুটেপুটে খাবে, দেশকে একটি ‘ফেইল্ড স্টেটে’ পরিণত করবে। আমার মনে হয় যে, এরকম ‘বেড ল’ অন্য কিছু হতে পারে না।”

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬’ এর খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়।

নতুন এই আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অভিযোগ করে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন এর বিরোধিতা করেছে।

নাগরিকত্ব আইনের বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারসহ সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকেরা বৈবাহিক বা অন্য কোনো সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হলে তারা একসঙ্গে দুই দেশের নাগরিক অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিক থাকতে পারবেন না। তাদের এক দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ‘সেন্টার ফর ন্যাশনালিজম স্টাডিজ’ সংগঠনের উদ্যোগে ‘নাগরিকের নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব আইন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। 

প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনটিকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে মঈন বলেন, “ইউনির্ভাসাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস, যেটা জাতিসংঘ করেছে, তার আর্টিক্যালের সুনির্দিষ্ট ধারায় (১৫/২) বলা আছে, ‘এভরিওয়ান হ্যাজ এ রাইট টু এ ন্যাশনালিটি অর্থাৎ পৃথিবীতে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করেছে, তার নাগরিকত্ব পাওয়ার মৌলিক অধিকার আছে এবং সেই নাগরিকত্ব কিন্তু কখনো কেড়ে নেওয়া যাবে না।

“এই আর্টিক্যাল মেনে নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র স্বাক্ষর করেছে। যদি আমরা ইউনির্ভাসাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসের অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হয়ে থাকি, তাহলে এমন আইন আমরা কীভাবে করি, যে আইনের মাধ্যমে আমরা কোনো মানুষের নাগরিকত্ব হরণ করব? তাহলে দুইটা পরস্পরবিরোধী।”

প্রস্তাবিত আইন দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনকেও লঙ্ঘন করবে দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “এই আইনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সংবিধানকেও খর্ব করবো, সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।”

সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার মীর হেলালউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ মো. আবু জাফর, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন ও কাদের গনি চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।