র-এর ভূমিকা ছিল ২০১৪ সালের ভোটে: ফখরুল

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলে ২০০১ সালে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2017, 12:22 PM
Updated : 13 March 2017, 12:22 PM

বিএনপি মহাসচিব পাল্টা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতেই বরং ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ‘র’ এর ভূমিকা ছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে বলেছিলেন, গ্যাস রপ্তানিতে তিনি রাজি হননি বলে ২০০১ সালে র ও যুক্তরাষ্ট্রের যোগসাজশে আওয়ামী লীগকে ভোটে হারানো হয়েছিল।

তার ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা হতবাক হয়েছি। এত বড় একটা দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন, এটা আমাদের চিন্তার মধ্যেই আসে না।

“এই উক্তির মধ্য দিয়ে তিনি এটা প্রকাশ্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এদেশে বিদেশিরা কাজ করছে এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সরকার পরিবর্তনে বা ইন্টারফেয়ারেন্সের মধ্য দিয়ে আছে।”

বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে বিদেশিরা ভূমিকা রাখলে আওয়ামী লীগ বিদেশিদের কাছে কী মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তা জানতে চান ফখরুল।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকায় সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এখানে আসলেন, সব জায়গায় দৌড়ালেন এবং এরশাদ সাহেবের কাছেও গেলেন, তাকে নির্বাচনে নিয়ে গেলেন।

“আমরা কি এটাই ধারণা করব বা দেশের মানুষ এটাই মনে করবে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ‘র’ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে, ভারত সরকার বড় ভূমিকা পালন করেছে।”

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ দাবি করে ফখরুল বলেন, “তার রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি অবলীলায় মিথ্যাচার করেন, এই মিথ্যাচারগুলো করার ফলে যেটা হয়, জাতি আরও বিভক্ত হয়ে পড়ে।”

২০০১ সালে ‘হাওয়া ভবন’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “এমন সব কথা-বার্তা, যাতে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই, মিথ্যাচার সম্পূর্ণভাবে।

“এখন তো পাবলিক পারসেপশন হচ্ছে, খোদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেই না কি বাইরের লোকজন বসে থাকে। কারা বসে থাকে আমরা জানি না, লোকজন বলে তাই।”

খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারত সফরের গিয়ে পানির কথা বলতে ভুলে গেছেন বলে শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয় দাবি করে তার সপক্ষে তখনকার বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ইশতেহার তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

“ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা রাওয়ের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার আলাপের প্রত্যেকটা যৌথ ইশতেহারে এসেছে। যখনই বেগম খালেদা জিয়া ভারতে গেছেন, তখন এই পানি সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন। বর্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন, মেরিটিয়াম বাউন্ডারি নিয়ে কথা বলেছেন।”

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়াই বাংলা ভাষায় প্রথম বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানান বিএনপি নেতা।

সরকার উন্নয়নের ‘ভ্রান্ত পরিসংখ্যান’ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

রোববার রাতে ঢাকার মালিবাগে ফ্লাইওভারের গার্ডার দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই প্রকল্পটি জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দঁড়িয়েছে।  দিনের পর দিন প্রকল্পের খরচ বাড়ানো হচ্ছে, ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে এবং এই ঘটনাগুলো ঘটছে। ওই রাস্তায় যারা যাতায়াত করেন, তারা জানেন যে কী ভোগান্তিতে পড়তে হয়।”  

রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।