ভোটের চিন্তায় সাম্প্রদায়িকতায় আ. লীগ: সেলিম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি সামনের নির্বাচন সামনে রেখে সুবিধা পাওয়ার আশায় সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে মন্তব্য করেছেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2017, 12:52 PM
Updated : 11 March 2017, 04:45 AM

তিনি বলেছেন, “জামায়াতে ইসলাম, বিএনপিপন্থী; হেফাজতে ইসলাম আওয়ামী লীগপন্থী। আওয়ামী লীগ হোক, বিএনপি হোক- দুই দল সাম্প্রদায়িকতার লেজ ধরে নাচানাচি করে, তারা মনে করছে নির্বাচনে সুবিধা নিতে পারবে।”

নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নারী সেল আয়োজিত নারী-গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের প্রধান সেলিম।

সাম্প্রদায়িকতাকে নারীমুক্তির পথে অন্যতম বাধা হিসাবে চিহ্নিত করে হেফাজতে ইসলামের দাবির প্রেক্ষাপটে পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস পরিবর্তন ও বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনে সংশোধনী আনার কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, “তাদের পরামর্শক্রমে আমাদের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাস ও বিবাহের নিম্নতম বয়সসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটা বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন হয় নাই, এটা বাল্যবিবাহ আইনিকরণের আইন হয়েছে।যেটা আগে বেআইনি ছিল, সেটাকে আইনগত সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে।

“বলা হয়েছে ১৮ বচরের নিচে বিয়ে দেওয়া যাবে না, তবে..। ক্ষেত্রবিশেষে এমনভাবে বলা হয়েছে যে, ঘটনা ঘটানোর পর ক্ষেত্রের পক্ষে যুক্তিটা উপস্থাপনের সুযোগ আপনি পেয়ে যাবেন। সাধারণ কমনসেন্সের কথা অস্বীকার করে আইনটি পাস করেছে।”

শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও নারীমুক্তি লড়াই একই সঙ্গে চালিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান সেলিম।

কেবল প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও স্পিকার নারী হলেই নারীমুক্তি সম্ভব হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একজন-দুই জনকে নিয়ে এসে বসিয়ে দিলে নারীমুক্তি হয় না। একজন নারীও কিন্তু শোষণের পরিচালক হিসাবে ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি শোষণের বিরুদ্ধে কি না, নারীমুক্তির পক্ষে কি না- এটা আমাদের কষ্টিপাথরে যাচাই করতে হবে।”

নারী সমাজের প্রতি ‍দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সিপিবি সভাপতি বলেন, “নারী সমাজকে মর্যাদা দেওয়া এবং নারীমুক্তির প্রশ্নে বিরূপ মনোভাব পোষণ করলে আমরা কমিউনিস্ট পার্টির খাতায় তার নাম আর কোনদিন রাখতে দিব না। যদি বর্ণচোরা কেউ এভাবে ঢুকেও যায়, প্রতিটি ইউনিটকে নির্দেশ দিচ্ছি, যারা নারী সমাজকে মর্যাদা দিতে জানে না, তারা যদি ভুল করে কমিউনিস্টের খাতায় থাকলেও আপনারা কেটে দিবেন।”

সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও নারী সেলের আহ্বায়ক লক্ষ্মী চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সিপিবি নারী সেলের নেত্রী তাহমিনা ইয়াসমিন নীলা, লুনা নূর, জলি তালুকদার, লাকী আক্তার ও নারায়ণগঞ্জের নারী সেলের নেত্রী শাহানারা বেগম বক্তব্য দেন।

নারীনেত্রী মাকছুদা আক্তার লাইলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশের শুরুতে গণসংগীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের শিল্পীরা।

গণসমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।