আ. লীগের তৃণমূলে সরাসরি বহিষ্কার নয়: কাদের

শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে নেতা-কর্মীদের সরাসরি বহিষ্কার বা স্থানীয় কমিটি বিলুপ্ত করা থেকে জেলা, উপজেলা, মহানগর ও পৌর কমিটিকে বিরত থাকতে বলেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2017, 09:31 AM
Updated : 3 March 2017, 10:14 AM

ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সাংগঠনিক এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত বুধবার সারা দেশের সব ইউনিটকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কাদের। 

তিনি বলেন, দলের কোনো শাখার কেউ অপরাধ বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করলেও তাকে সরাসরি বহিষ্কার করা যাবে না। বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তা চূড়ান্ত হবে।

“এছাড়া কোনো কমিটি হুট করে ভাঙ্গা যাবে না। এ ব্যাপারে সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটির সংশ্লিষ্ট যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে জমা দিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মতামতসহ তা কেন্দ্রীয় কমিটিতে উত্থাপন করবেন। যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত বা বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে।”

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের প্রভাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের দ্বন্দ্ব যেভাবে মেটানো হয়েছে, কুমিল্লাতেও সেভাবেই সমাধান করা হবে।

“নারায়ণগঞ্জে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দলীয় প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে যেটা সম্ভব, কুমিল্লাতেও সেটা সম্ভব।”

কুমিল্লা আওয়ামী লীগ বেশ কয়েক ভাগে বিভক্ত হলেও সদর আসনের সাংসদ হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও প্রবীণ নেতা আফজল খানের দ্বন্দ্ব বেশ আলোচিত। সম্প্রতি সিটি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে এ দুই নেতার দ্বন্দ্ব সংবাদের শিরোনামও হয়।

দলের এই বিভেদের কারণেই গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আফজল খান বিএনপির মনিরুল হক সাক্কুর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন বলে দলটির অনেক নেতা-কর্মী মনে করেন। আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠেয় এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে।

আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির অংশ নেওয়ার সুযোগ সংবিধানে আছে কিনা? সংবিধানে যদি না থাকে তাহলে আমরা কী করে সে সুযোগ দেব?”

‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব‌্যের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “সময় এবং স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তেমনি সংবিধান ও নির্বাচনও কারও জন্য অপেক্ষা করবে না।”

বিএনপি বর্জন করলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ‘থেমে থাকেনি’ বলে মন্তব‌্য করেন সেতুমন্ত্রী কাদের।

“এবারও যদি কেউ নির্বাচনে না আসেন তাহলে নির্বাচন থেমে থাকবে না। তবে না আসার কোনো কারণ নেই। নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বিএনপি নেবে বলে আমার মনে হয় না।”

শনিবার নগরীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে অনুষ্ঠেয় মহিলা আওয়ামী লীগের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে আসেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “আধুনিক একটা সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা যেন নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিতে পারি- এমন পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আমাদের সব সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে প্রথমে শনিবার মহিলা আওয়ামী লীগ এবং ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের সম্মেলন হবে।”

এ বছরের মধ্যে সহযোগী সব সংগঠনের সম্মেলন শেষ করা এবং দলের নিম্ন স্তরের সব কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

অন‌্যদের মধ‌্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফুন্নেছা মোশাররফ ও সাধারণ সম্পাদক পিনু খান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।