স্বৈরাচার বল, আমি যা করেছি তা তোমরা পারনি: এরশাদ

‘স্বৈরাচার’ আখ্যায় খেদ প্রকাশ করে সাবেক সামরিক শাসক এইচএম এরশাদ বলেছেন, তার শাসনামলে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, অন্যদের সময় তা হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2017, 02:44 PM
Updated : 26 Feb 2017, 03:13 PM

সামরিক শাসক নন বলেও দাবি করেছেন আশির দশকে নয় বছর দেশ শাসন করা এই জেনারেল।

রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহনগর উত্তর আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য দেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ।

তিনি বলেন, “আমি সামরিক শাসক নই। বিচারপতি সাত্তার সামরিক আইন জারি করেছিলেন। আমি সেদিন ব্যারাকে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ১৯৮৪ সালে নির্বাচন দিয়েছিলাম। তখন কেউ নির্বাচনে আসেনি। তাই ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি গঠন করতে বাধ্য হয়েছিলাম; আর ক্ষমতায় ছিলাম বিধায় এদেশের আমূল পরিবর্তন আনতে পেরেছিলাম। সবই আল্লাহর ইচ্ছা।”

এরশাদ বলেন, “তোমরা যারা আমাকে স্বৈরাচার আখ্যা দাও, আমি দেশের জন্য যে উন্নয়ন ও কাজ করেছি তা তোমরা করতে পারনি। আজকে যে রাস্তার উপর ফ্লাইওভার নির্মিত হচ্ছে সে রাস্তা আমার নির্মাণ করা। যে পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে সে মাওয়া বিশ্বরোডও আমার শাসনামলে করা।

“বাংলা ভাষা আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই স্বৈরাচারই ১৯৮৬ সালে সংসদে বিল পাস করেছিল, সংসদসহ সকল অফিস আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন করতে হবে। বিজ্ঞাপন, ক্যালেন্ডার ও গাড়ির নম্বরে বাংলা বাধ্যতামূলক করেছিলাম। শহীদ মিনার ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল, তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার আমি স্বৈরাচারই করেছিলাম। স্মৃতিসৌধ সংস্কার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী মাজার আমি করেছিলাম।”

নব্বইয়ে গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়া এরশাদের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলার বিচার চলছে।

এসব মামলা কেন চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, “আমার নামে ৪২টি মামলা। এখনো সেগুলো চলছে। কেন চলছে? এই মামলাগুলো আগের সরকারের দেওয়া, তারপরও প্রত্যাহার হচ্ছে না। কারণ জাতীয় পার্টিকে সবাই ‘ফ্যাক্টর’ মনে করে।”

তিনি বলেন, “এত অত্যাচার অবিচারের পরও আমি বেঁচে আছি। আমার কোনো বডিগার্ড নেই, গানম্যান নেই- একা চলি। কারণ আমি জানি দেশের জনগণ আমাকে ভালোবাসে। এই দেশের জনগণই আমার গানম্যান।”

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে এরশাদ বলেন, “এই দেশে যারা প্রতিহিংসার রাজনীতি চালু করেছিল তাদের অবস্থা কী? তারা আজ নিঃশেষ হতে চলেছে। সবই আল্লাহর বিচার।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক এস এম ফয়সল চিশতী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।