রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এ দেশের একটি রাজনৈতিক দল বিদেশের একটি কোর্টে সন্ত্রাসী দল হিসাবে পরিচিত হয়েছে। এ দল তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে একটি সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে।
“আমরা এদের কবলে যেন আর না পড়ি। আমাদের কাজে জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে আবারও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
হরতাল-অবরোধে সহিংসতা ও সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপির ‘সংশ্লিষ্টতার’ কারণে দলটির এক কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন কানাডার অভিবাসন দপ্তর খারিজ করে দিলে তিনি ফেডারেল আদালতে যান। ফেডারেল আদালতও গত জানুয়ারিতে তার আবেদন খারিজ করে দেয়, যার পূর্ণাঙ্গ রায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বিএনপি সন্ত্রাসে ছিল, আছে বা ভবিষ্যতেও থাকতে পারে- এমন ধারণা করার যৌক্তিক কারণ আছে।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাষা সৈনিক আবদুল বারী উকিল এক আদর্শিক মূর্ত প্রতীক’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসের আলোচনায় বিএনপির প্রসঙ্গ টানেন আনিসুল হক।
তিনি বলেন, “মুসলিম লীগের কর্তৃত্ব থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তাদের নানা কুকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগের অংশটিই পরিবর্তিতে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে।
“মুসলিম লীগ সরকার ও পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এতো আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, কিন্তু এটাকে কখনো কেউ সন্ত্রাসী সংগঠন বলতে পারে নাই। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করেছিল।”
আনিসুল হক বলেন, তখনকার দিনে আন্দোলন সংগ্রাম খুব কঠিন ছিল। কথা বলাও ছিল কঠিন। কথা বললেই ঠিকানা হতো জেলখানা। তবুও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মিলে অনেকে সেই সংগ্রামে ছিলেন। কারণ তাদের রাজনীতিতে লোভলালসা ছিল না।
ভাষা সৈনিক আবদুল বারী উকিল ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭৫ সালে মৃত্যু পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূলত আওয়ামী লীগের জায়গা। আবদুল বারী উকিলের মতো লোকেরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকে দুঃসময়ে সেখানে দলকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
“সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগকে আরও সুসংহত করার চেষ্টা চলছে। যদিও বারবার আমরা সেখানে মার খেয়ে যাচ্ছি।”
‘ভাষা সৈনিক আবদুল বারী উকিল ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই ভাষাসংগ্রামীকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদানের দাবি জানান একজন বক্তা।
ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ও আবদুল বারীর মেয়ে শাহনাজ বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বক্তব্য দেন।