গ্যাসের দাম বৃদ্ধি: ২৮ ফেব্রুয়ারি সিপিবি-বাসদের হরতাল

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে আধাবেলা হরতাল ডেকেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2017, 12:17 PM
Updated : 24 Feb 2017, 12:17 PM

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই কর্মসূচির কথা জানান।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে সরকারের ‘গণবিরোধী সিদ্ধান্ত’ আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম ধারার দল দুটি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা ঢাকায় হরতাল করবে তারা। তবে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ও পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

“চলমান সীমাহীন লুটপাটের বোঝা দেশের জনগণের কাঁধে চাপাতে সরকারের দুর্নীতি ও ভুলনীতির ফলে জ্বালানি খাতে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তার দায় জনতার উপর চাপানোর জন্যই অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। জনগণ এই সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মেনে নেবে না,” বলা হয় বিবৃতিতে।

অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সিপিবি-বাসদ এই অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করবে।”

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বৃহস্পতিবার বিভিন্ন খাতে গ্যাসের দাম মার্চ ও জুনে দুই ধাপে গড়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। কিন্তু তাতে আবাসিক গ্রাহকদের রান্নায় ব্যবহৃত গ্যাস ও বাণিজ্যক সংযোগে দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ।

এই ঘোষণা অনুযায়ী, আবাসিক গ্রাহকদের আগামী ১ মার্চ থেকে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে, যা এতোদিন ছিল যথাক্রমে ৬০০ টাকা ও ৬৫০ টাকা

আর দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে।

গৃহস্থালিতে মিটারে যারা গ্যাসের বিল দেন, তাদের মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহারের জন্য ৯ টাকা ১০ পয়সা এবং জুন থেকে ১১ টাকা ২০ পয়সা করে দিতে হবে। এতোদিন প্রতি ঘনমিটারে তাদের বিল হত ৭ টাকা করে।

এছাড়া যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম ১ মার্চ থেকে হবে প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা হবে। আর ১ জুন থেকে হবে ৪০ টাকা।

পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যক খাতেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত, যার ফলে শিল্পোৎপাদনে খরচ বাড়বে, ব্যবসায়ীরাও তা তুলবেন দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়ে। শেষ বিচারে ভোক্তাদের পকেট থেকেই তা যাবে।

এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সমিতির (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, বিইআরসির গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবছেন তারা।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে রপ্তানি খাতও চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে ‘গণবিরোধী’ সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপিও।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “মোটা বাজেটের অর্থ জোগান দিতে জনসমর্থনহীন সরকার জনগণের পকেট কেটে বল্গাহীন রাজস্ব আহরণের জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।”