‘শহীদ মিনারে সবাই যেখানে ছিলেন, খালেদা জিয়াও সেখানেই ছিলেন’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অন‌্য সবাই যেখানে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, খালেদা জিয়াও সেখানে দাঁড়িয়েই ফুল দিয়েছেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ‌্যাচারের অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2017, 12:57 PM
Updated : 23 Feb 2017, 05:53 PM

একুশের প্রথম প্রহরে ফুল দেওয়ার সময় খালেদা জিয়া দলীয় নেতাদের নিয়ে মূল বেদীতে উঠে পড়েন বলে ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের শিক্ষক নেতাদের বক্তব‌্যের পর তা ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব‌্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শুধু মিথ্যাই বলেন না, ডাঁহা মিথ্যা কথা বলেন।”

শহীদ মিনারে বিভিন্ন জনের ফুল দেওয়ার পাঁচটি আলোকচিত্র সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি বলেন, তার দলের চেয়ারপারসন তাদের মতোই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

“আমি আপনাদের দেখাতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কলিমুল্লাহ সাহেবরা কোথায় দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধার্ঘ জানাচ্ছেন। পুলিশ এবং সর্বস্তরের জনগণ কোথায় দাঁড়িয়ে থেকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ কোথায় দাঁড়িয়ে থেকে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করছেন। দেখুন, সাংবাদিকরা কোথায় দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করছে।”

“বিএনপি চেয়ারপারসন ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কোথায় দাঁড়িয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করছেন, দেখুন। ঠিক একই জায়গায়- নগ্নপথ ম্যাডাসহ সবার। তাহলে প্রধানমন্ত্রী যে সত্য কথা বলেন না, এটা একেবারে সুস্পষ্ট।”

শহীদ মিনারের মূল বেদীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে এই সমালোচনা বিএনপির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ‘জন্মান্ধ বিরোধিতা’র অংশ বলে দাবি করেন রিজভী।

এই প্রসঙ্গে গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের পর বিরোধী দলকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কথাও বলেন তিনি।

“আজকে দেখুন- ঘটনার নাটক বানাতে বানাতে কোন জায়গায় চলে এসেছে। তাদের প্রভাবিত মিডিয়া যেটা প্রচার করেন, জনগণ তা বিশ্বাস করে না, দেশবাসী বিশ্বাস করেন না, পৃথিবীর কেউ বিশ্বাস করে না।”

গত কয়েক সপ্তাহে সারাদেশে নিখোঁজ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানে নেকড়ের মুখে মেঘ শাবকের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া।

“এরা এখন একটি এমন রাষ্ট্র ও সমাজ কায়েম করেছে, যেখানে ‘এক ব্যক্তি এক দল’ এর বিরুদ্ধে আকার ইঙ্গিতে সমালোচনা করলেও তাকে অদৃশ্য হয়ে যেতে হবে।”

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন আকনের নির্বাচনী পথসভায় হামলা ও নেতা-কর্মীদের আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দাও জানান রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম‌্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভোলার লালমোহনে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা এবং তাদের দোকান-পাট বন্ধ করে দিয়েছে।

“গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোলায় বিএনপির সম্মেলন হওয়ার পর ক্ষমতাসীনরা লালমোহন উপজেলার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে, তাণ্ডব চালাচ্ছে। কেবল বিএনপি করার অপরাধে এটা করা হচ্ছে,” বলেন ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস‌্য হাফিজ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুল আউয়াল খান, মুনির হোসেন, ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী তালুকদার, লালমোহন থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নজরুল কাদের মার্শাল উপস্থিত ছিলেন।