কারণ হিসেবে নবগঠিত ইসিতে বিএনপির সুপারিশ থেকেও লোক আসার কথা বলছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আই অ্যাম মোর দ্যান শিওর। বিএনপি উইল পার্টিসিপেইট ইন নেক্সট জেনারেল ইলেকশন। এখানেতো তাদের (নামের) লোক আছে, সবাই নিরপেক্ষ, একেবারে দলীয় লোক কারও নেই।
“এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসবে, এ ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ নেই।”
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া নাম থেকে ১০ জনকে বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে সার্চ কমিটি, সেখান থেকে সোমবার পাঁচ সদস্যেগর নির্বাচন কমিশন গঠন করেন মো. আবদুল হামিদ।
এই কমিশনে সিইসি কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে আছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।
এদের মধ্যে কবিতা খানম আওয়ামী লীগের পছন্দের এবং মাহবুব তালুকদার বিএনপির সুপারিশে ছিলেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম জানিয়েছেন।
কমিশনের প্রতি দলের আস্থার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করে সংলাপ শেষে আমরা যেটা বলেছিলাম সেটা হচ্ছে, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত, তিনি যে সিদ্ধান্তই নেন, সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তিনি যে সার্চ কমিটি করেন অথবা সার্চ কমিটির সুপারিশক্রমে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা আমরা মেনে নেব।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ফেস্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে দলের প্রতিক্রিয়া জানান সাধারণ সম্পাদক কাদের।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রস্তাব থেকে একজন করে নতুন কমিশনে স্থান পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা সার্চ কমিটিতে পাঁচটি নাম দিয়েছি, পাঁচটি নাম বিএনপি দিয়েছে। এখন বিএনপিরও একজন নেয়া হয়েছে, আওয়ামী লীগেরও একজনকে নেয়া হয়েছে। তাহলে এখানে বৈষম্য কোথায়?
“আর অন্যান্য দলওতো এখানে আছে, আমি যেটা শুনেছি.. ১২৮টির মতো নাম, এই নাম থেকেওতো নাম নিতে হবে এবং সব মিলিয়ে পাঁচজন।”
প্রাথমিকভাবে সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন কমিশন নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এসেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আপনি গতকাল থেকে দেখুন, যত প্রতিক্রিয়া আছে, বুদ্ধিজীবী সমাজ-সুশীল সমাজসহ সবাই একবাক্যে বলেছেন যে, ভালো একটা নির্বাচন কমিশন হয়েছে। এখন তাদের কাজে তারা কী করেন।
“অবয়বে ভালো মনে হচ্ছে, পরবর্তীতে তাদের কার্যক্রম দেখে প্রতিক্রিয়া জানাব। এমনই তো বলছে, তার মানে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সকলে ভালো বলছে। তাহলে বিএনপি কেন হতাশ, কেন ক্ষোভ আমিতো জানি না।”
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিএনপি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জনতার মঞ্চের সংগঠক বলেছে। আমি জানতে চাই বিএনপির কাছে, তাহলে কি তারা জনতার বিরুদ্ধে?”
“বিএনপির পুরোনো একটা অভ্যাস আছে। অভ্যাসটা হলো, আমি সালিশ মানি, তালগাছটা আমার। এখন তাদের একজন, আমাদের একজন, (বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী) পুরো লিস্টটা ধরিয়ে দিলেও বলতো- মানি না, মানব না। পুরোনো অভ্যাস, পুরানো ভাঙ্গা রেকর্ড, বারেবারে বাজায়।”
তবে দলটি আর নির্বাচন বর্জন করবে না মন্তব্যত করে তিনি বলেন, ‘গতবারের ভুলের পুনরাবৃত্তি’ করলে বিএনপি আরও কতোটা সংকুচিত হবে সেটা দলটির বুদ্ধিসুদ্ধি, ভিশন ও একটু দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতারা ‘ভালো করেই জানে’।