লক্ষ্য ‘সুন্দর স্বপ্ন’: ফখরুল

অতীতের সব জঞ্জাল পেছনে ফেলে বিএনপি নতুন স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2017, 10:05 AM
Updated : 21 Jan 2017, 10:14 AM

আর এজন্য নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ‘সার্চ কমিটি’ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন সম্মেলন কক্ষে জিয়া পরিষদের প্রতিনিধি সম্মেলনে হয় বক্তব্য দিচ্ছিলেন ফখরুল।

সম্মেলনে সারাদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন। 

বক্তব্যে মির্জা ফখরুল নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি এখনও সার্চ কমিটি ঘোষণা করেননি। আমরা এই মুহূর্তে কোনো নেগেটিভ কিছু বলতে চাই না, প্রত্যাশাও করতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, যে গণতন্ত্রের জন্য অতীতে যারা লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্যে একজন। দীর্ঘকাল তার সংগ্রামী জীবন রয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন।

“তিনি (রাষ্ট্রপতি) নিঃসন্দেহে জনগণের  আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবার জন্য বাংলাদেশের মানুষের চোখের ভাষা বুঝে এমন একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন, যে কমিটি অবশ্যই নিরপেক্ষ হবে, যোগ্য হবে এবং সঠিক নির্বাচন কমিশন গঠন করতে সক্ষম হবে। আমরা এটাই প্রত্যাশা করি।”

ইতিবাচক প্রত্যাশায় ফখরুল বলেন, “আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই, অতীতের সমস্ত জঞ্জালগুলোকে ফেলে দিয়ে একটা সুন্দর স্বপ্নের দিকে এগোতে চাই, প্রভাতের দিকে এগোতে চাই। সেটাই বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারবে, সেটাই আমাদেরকে এই ফ্যাসিবাদ থেকে রক্ষা করতে পারবে, সেটাই আওয়ামী শাসন থেকে আমাদেরকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে।”

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। 

সংবিধান অনুযায়ী নতুন কমিশন গঠন করতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ইতোমধ‌্যে 

৩১টি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছেন।

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই গত ১৮ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে এ সংলাপ শুরু হয়। সার্চ কমিটি গঠন ও ইসি নিয়োগের বিষয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব দেয় দলটি।

বিদায়ী নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কয়েকদিন পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদায় হবেন। আজকে পত্রিকায় তার স্টেটমেন্ট দেখলাম, বলেছেন পাঁচ বছর নির্বাচন কমিশন খুব সফল হয়েছে। সফলতার বিবরণ দেখেন- ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত- সফল। এরপরে উনি পাঁচ ভাগ ভোটকে ৪০ ভাগ করেছেন- সফল।

এরপরে উপজেলা পরিষদের পাঁচ ধাপের নির্বাচনে দুই ধাপে দেখল মোটামুটিভাবে ভালো নির্বাচন হচ্ছে, পরের তিনটি ধাপে দখল- সফল, পৌরসভা নির্বাচন দখল- সফল, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন দখল- সফল। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেকে বলেন, অত্যন্ত সুক্ষ নতুন কৌশলে সফল।”

তিনি বলেন, “আজকে আবার দেখলাম উনি (সিইসি) ঘোষণা করেছেন ইভিএম নয়, ডিজিটাল ভোটিং। বুঝেন- ডিজিটাল ভোটিংয়ে আমেরিকার মতো দেশের ভোট হাইজ্যাক করে চলে যায় রাশিয়া। এখন উনারা ডিজিটাল ভোট করবেন। অর্থাৎ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আওয়ামী লীগকে চিরদিন ক্ষমতায় রাখার জন্য যা যা করার উনারা করবেন।”  

এই অবস্থার থেকে উত্তরণে সকলকে ‘পায়ের উপর শক্ত করে’ দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান ফখরুল। জিয়া পরিষদকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক মো. মমতাজ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

এর আগে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা-বেলুন উড়িয়ে প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল।