নিজেরা সংলাপ করুন: দলগুলোকে রাষ্ট্রপতি

গ্রহণযোগ‌্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন‌্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে সংলাপ করার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2017, 02:21 PM
Updated : 17 Jan 2017, 05:39 PM

সংলাপের জন‌্য বিএনপির আহ্বান এবং তা ক্ষমতাসীন দলের প্রত‌্যাখ‌্যানের মধ্যে মঙ্গলবার ইসি গঠন নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় এই পরামর্শ আসে রাষ্ট্রপ্রধানের।

সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে বলে নতুন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন আবদুল হামিদ।

দুই প্রধান রাজনৈতিক জোটের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মধ্যে এই সংলাপে আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ আবদুল হামিদ বরাবরই রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।

তিনি এর আগে বলেছিলেন, জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য জরুরি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন‌্য দলগুলোর সহযোগিতাও প্রয়োজন।

রাজনৈতিক দলগুলোর পরমত সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি চর্চার উপরও জোর দিয়ে আসছেন আবদুল হামিদ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ (ফাইল ছবি)

মঙ্গলবার খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে উলামা-ই ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় তিনি দলগুলোর নিজেদের মধ‌্যে সংলাপের কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে তার প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের পাশাপাশি দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে এবং সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আলোচনা বা সংলাপ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য কমাতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকেই সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে হবে।

দশম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে এলেও আওয়ামী লীগ নেতারা তাতে সাড়া না দিয়ে বলে আসছে, আলোচনার পথ খালেদা জিয়ার দলই বন্ধ করে দিয়েছে।

৫ সদস্যের সার্চ কমিটির প্রস্তাব খেলাফতের

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি দল

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় খেলাফত মজলিসের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসি গঠনে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরে।

ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয় দলটি। আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

ওই কমিটিতে আলেম সমাজের প্রতিনিধি রাখারও প্রস্তাব করেছে ইসলামী দলটি।

এছাড়া ইসির নিজস্ব সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেন দলটির মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের।

খেলাফত ইসি হঠনে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগের প্রশংসা করে বলে, বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও মানুষের আস্থা অর্জনে সহায়তা করবে।

সাবেক প্রধান বিচারপতিকে সিইসি চায় জমিয়তে উলামা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জমিয়তে উলামা-ই ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা

জমিয়তে উলামা-ই ইসলাম বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন দলের নির্বাহী সভাপতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস।

জমিয়তে উলামা-ই ইসলাম স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে সুস্পষ্ট আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, “প্রতিনিধি দল বলেছে, দেশ ও জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ জনমনে আশার সঞ্চার করেছে। তারা বলে, নির্বাচন কমিশন যত নিরপেক্ষ হবে ততই জাতির নিকট আস্থাভাজন হবে।”