বিতর্কহীন নির্বাচনে দলগুলোর চেষ্টা বাঞ্ছনীয়: রাষ্ট্রপতি

বিতর্কহীন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলগুলোর চেষ্টা থাকা ‘বাঞ্ছনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2017, 03:41 PM
Updated : 16 Jan 2017, 03:44 PM

সোমবার বঙ্গভবনে নির্বাচন কমিশন গঠনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

এই আলোচনায় খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের আমির মাওলানা হাবীবুর রহমান। দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জানান মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “আলোচনায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক নির্বাচন কমিশন গঠনে গঠনমূলক প্রস্তাব দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি আশা করেন, দলগুলোর মতামত ও প্রস্তাব শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক হবে।

“রাষ্ট্রপতি বলেন, বিতর্কহীন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর চেষ্টা থাকাও বাঞ্ছনীয়।”

প্রেস সচিব বলেন, “আলোচনায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির এই আলোচনার উদ্যোগ জাতির কাছে অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক।”

খেলাফত মজলিস নির্বাচন কমিশন গঠনে সুস্পষ্ট আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন, নির্বাচন কমিশনের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপন এবং অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ঐকমত‌্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে।

৫-৭ সদস্যের সার্চ কমিটি চায় বাংলাদেশ ন্যাপ

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও এদিন আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি।

দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। দলটি ১১ দফা প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির সামনে তুলে ধরে।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, “বাংলাদেশ ন্যাপ নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। এছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠনে ৫-৭ সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দেয়।”

বাংলাদেশ ন্যাপ নির্বাচন সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়নের আগে নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া বিদ্যমান আইনের পরিবর্তনের আগেও দলগুলোর মতামত নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

আলোচনায় রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা অপরিহার্য। দলগুলোর মধ্যে নীতি-আদর্শের পার্থক্য থাকলেও নকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। আর তাহল জনকল্যাণ।

“রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে,” বলেন রাষ্ট্রপতি।

৯ সদস্যের ইসি চায় গণফ্রণ্ট

দরবার হলে এদিন গণফ্রন্টের সঙ্গেও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন। দলের পক্ষ থেকে ১৪ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “প্রতিনিধি দল নিরপেক্ষ ও অর্থবহ নির্বাচনের জন্য শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেন। তারা কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেন।”

প্রতিনিধি দল সৎ, দুর্নীতিমুক্ত এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন।

গণফ্রন্ট নয় সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে তাতে তিন জন নারী রাখারও সুপারিশ করে। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম চালুর প্রস্তাব করেন।

প্রতিনিধি দল আশা প্রকাশ করে, রাষ্ট্রপতির এ সংলাপ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে কার্যকর ও ফলপ্রসূ হবে।