সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিষবৃক্ষ রাতারাতি উপরে ফেলা সম্ভব নয়: কাদের

উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিষবৃক্ষ রাতারাতি উপরে ফেলা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2017, 12:58 PM
Updated : 16 Jan 2017, 12:58 PM

সোমবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের বিষবৃক্ষটি কিন্তু অনেক শাখা প্রশাখা বিস্তার করেছে। এই বিষবৃক্ষকে রাতারাতি উপরে ফেলা সম্ভব নয়।

“উপরে ফেলতে হলে সকল বাঙ্গালির আস্থার প্রতীক জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। খণ্ড খণ্ড ভাবে সম্ভব নয়।”

সাম্প্রতিক কয়েক ব্ছরে মুক্তমনা লেখক-প্রকাশক, অ্যাকটিভিস্ট এবং হিন্দু পুরোহিতসহ অন্যান্য ধর্মীয় গুরুদের কুপিয়ে হত্যার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এছাড়া এক সময়ের জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ উগ্রপন্থি সংগঠনের মতো করে উত্থান ঘটে নব্য জেএমবির, যারা গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর আইএস ও আল কায়েদার নামে দায় স্বীকারের বিবৃতি দেয় বলে ভাষ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে ‘বিএনপি জামাতের বর্বরোচিত তাণ্ডব ও অগ্নিসন্ত্রাসের খণ্ডচিত্র’ প্রদর্শনী শেষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা পরিষদ।

এতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “দুই নেত্রীকে যারা এক সঙ্গে বসাতে চান, আমি তাদেরকে বলব, পূর্বের ঘটনা গুলো মনে করুন। দেশের প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করে দাওয়াত করেছিলেন, কি ব্যবহার করা হয়েছে তা আপনারা সবাই দেখেছেন। ছেলে হারা মাকে শান্ত্বনা দিতে প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ফিরে এসেছেন। কার সঙ্গে সংলাপ।”

নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের প্রসঙ্গেও কথা বলে সেতুমন্ত্রী।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, “তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করে খুশি হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে তারা কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করার কথা বলেন নি। আমরা বলেছি। আর তারা চান সমঝোতা।

“ঘরের দরজা বন্ধ করে সংলাপের দরজা বন্ধ করেছে বিএনপি। কার সাথে সংলাপ, কেন এই সংলাপ? আজকের এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ সংবিধান। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের কাছে নেই।”

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত আন্দোলনের সময়ের নাশকতা ও আগুনে আহত কয়েকজন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তাদেরকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আপনাদের পঙ্গুত্ব নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না। আমরা মানবিক দিকটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি, দিব।”

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি জামায়াতের ‘বর্বরোচিত তাণ্ডব ও অগ্নিসংন্ত্রাসের খণ্ডচিত্র প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন প্রচার প্রকাশনা পরিষদের সদস্য সচিব আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

খণ্ডচিত্র প্রদর্শনী শেষে প্রচার ও প্রকাশনা পরিষদের পক্ষ থেকে সাতজনকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।

প্রদর্শনী দেখতে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।