সিপিবির কংগ্রেস ২৮ অক্টোবর থেকে

দুই প্রধান জোটের বাইরে ‘কার্যকর’ বিরোধী শক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আগামী ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর একাদশ কংগ্রেস করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2016, 11:27 AM
Updated : 25 Oct 2016, 04:17 PM

আগামী ২৮ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কংগ্রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে। এতে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গীতিআলেখ্য ‘দিন বদলের পালা’ পরিবেশন করবে। এরপর লাল পতাকার শোভাযাত্রা হবে রাজপথে।

পরদিন গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে (মহানগর নাট্যমঞ্চ) রুদ্ধদ্বার কাউন্সিলে দলের ভবিষ‌্যৎ কর্মপন্থা ও নেতৃত্ব গঠন হবে।

মঙ্গলবার পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এবারের কংগ্রেসের স্লোগান ঠিক হয়েছে- ‘সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীনতা নিপাত যাক’।

কংগ্রেসে ১০টি দেশের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে ২৬ জন প্রতিনিধি যোগ দেবেন বলে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর জানিয়েছেন। দেশগুলো হল ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, চীন, যুক্তরাজ‌্য, জার্মানি, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া।

কংগ্রেসের প্রেক্ষাপট ব‌্যাখ‌্যা করে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা মনে করি, বাংলাদেশের প্রধান বিপদ চারটি- সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাটতন্ত্র ও গণতন্ত্রহীনতা।

“চার দশক ধরে আমরা এই বিপদের মধ্যে বসবাস করছি। বর্তমানে দেশে বৈষম্য বাড়ছে, ঘুষ-দুর্নীতি বাড়ছে, সাধারণ মানুষের সঙ্কট তাদের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে। গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে উন্নয়ন আগে, গণতন্ত্র পরে।”

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলে মন্তব‌্য করেন দলটির এক সময়ের জোটসঙ্গী সিপিবির সভাপতি। বিপরীতে বিএনপি সরকারের বিরোধিতায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না বলে তার মূল‌্যায়ন।

“হাওয়া ভবনের কথা কেউ ভুলে যায়নি। জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া এবং হঠকারী সন্ত্রাসী নীতি অনুসরণের ফলে জনগণ তাদের উপর আস্থা রাখতে পারছে না।”

“আমরা বরাবর বলে আসছি, ‍মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমস্ত প্রগতিশীল শক্তির ঐক্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী বাম বিকল্প শক্তি গড়ে তোলা- এটাই এবার আমাদের কংগ্রেসের মূল আহ্বান,” বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি নেতা শাহ আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মাহবুবুল আলম, আহসান হাবিব লাবলু উপস্থিত ছিলেন।

কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন লিখিত বক্তব‌্য পড়ে শোনান। পরিচালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন।

এর আগে সিপিবির দশম কংগ্রেস হয়েছিল ২০১২ সালের ১১-১৩ অক্টোবর। চার বছর পর এবারের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের কংগ্রেসে সারাদেশে থেকে ৬৮৩ জন প্রতিনিধি যোগ দিচ্ছেন। এদের মধ্যে ২১৭ জন নারী এবং ১৭ জন ‘আদিবাসী’। পর্যবেক্ষক থাকবেন ১০৮ জন।

কংগ্রেস উপলক্ষে শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের (২য় তলা) কনফারেন্স কক্ষে ‘সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উদারনীতিবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে কংগ্রেসে যোগদানকারী বিদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন।

এর পাশাপাশি ২৯ ও ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭.৩০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।