ক্ষমতায় থাকাই আ. লীগের কাউন্সিলের প্রতিপাদ্য: বিএনপি

ক্ষমতায় থাকাই আওয়ামী লীগের সদ্য সমাপ্ত কাউন্সিলের মূল প্রতিপাদ্য বলে মন্তব‌্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2016, 10:24 AM
Updated : 25 Oct 2016, 10:54 AM

আগামী জাতীয় নির্বাচন ‘নির্দিলীয় নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ভোট আয়োজনের জন‌্য ‘সবার মতামত নিয়ে’ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে ‘সার্চ কমিটি’ গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “রক্তঝরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকাটাই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মূল প্রতিপাদ্য বলে আমাদের মনে হয়েছে এবং জনগণ সেটি বিশ্বাস করে।”

রিজভী বলেন, “সত্যিকারের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে মানুষের নির্ভয়ে ভোট দিতে পারার শর্ত থাকে, যাকে তারা মনে প্রাণে ঘৃণা করে। এ বিষয়টি তাদের কাউন্সিলে দলের সভানেত্রীর বক্তব্যে আমরা পেয়েছি।”

গত শনি ও রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন হয়। কাউন্সিলের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের।  

বিভিন্ন দেশের অর্ধশতাধিক রাজনীতিবিদ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যোগ দেন। বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কেউ যাননি। 

অধিকাংশ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যায়নি দাবি করে রিজভী বলেন, “এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগের একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে জায়েজ করতে কেউ আগ্রহী নয়। কাউন্সিলের পর থেকে তাদের নেতৃবৃন্দের কথা-বার্তায় জাতি আশান্বিত হওয়া দূরে থাক, তাদের বক্তব্যে একনায়কতান্ত্রিক জিঘাংসামূলক নির্দয় স্বৈরশাসনেরই প্রতিফলন পুনর্ব‌্যক্ত হয়েছে।”

এই বিএনপি নেতার আশঙ্কা, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনও ‘নিজেদের অধীনে’ করবে, যাতে জনমতের ‘প্রতিফলন ঘটবে না’।

“আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই কাউন্সিলে বলেছেন, যে করেই হোক আওয়ামী লীগকে আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাতে হবে এবং বিএনপিকে কোনোভাবে যেতে দেওয়া হবে না। এই ধরনের বক্তব্যে এটাই প্রমাণিত হয় যে, তারা... জবরদখলকারীর ভূমিকাই পালন করবে।”

ক্ষমতাসীন দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরে বক্তব্যের সমালোচনায় রিজভী বলেন, “উনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে ভুল করেছিল, তারা চোরাবালিতে হারিয়ে যাবে। তিনি তার নেত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলছেন, একই ঐতিহ‌্য অনুযায়ী তিনি হাঁটছেন।”

“বর্তমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনাকারীদের রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিয়ে, প্রাণহরণ, অন্যায়ভাবে আটক করে, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিধি-নিষেধ জারি রেখে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ যে অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে, তার দিকে নজর দিতে আমি জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেবকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”

অন‌্যদের মধ‌্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাইফুল ইসলাম পটু, হাফেজ আবদুল মালেক, শাহ নেসারুল হক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।