অষ্টম দফায় হাসিনার হাতে নৌকার হাল

টানা অষ্টমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলেন বঙ্গবন্ধুকন‌্যা শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2016, 04:04 PM
Updated : 23 Oct 2016, 04:04 PM

১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সম্মেলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দলটির শীর্ষ নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ তিন বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেছে।

শনিবার ২০তম জাতীয় সম্মেলন শুরুর আগে বেশ কয়েকবার দলীয় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পদ ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানান শেখ হাসিনা। তবে তার বিকল্প নেই বলে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের পর কাউন্সিলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাওয়ায় আবারও এ দায়িত্বে রয়ে গেলেন তিনি।

রোববার আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে ছয় হাজার ৫৭০ জন কাউন্সিলরের সবাই শেখ হাসিনার ওপরই আস্থা রাখেন।

এদিন কাউন্সিল অধিবেশনেও তিনি বেঁচে থাকতেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা বলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু কাউন্সিলররা তাকেই দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

বিগত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বিলুপ্তি ঘোষণা করার আগে শেখ হাসিনা তার সমাপনী বক্তব‌্যে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,“আজকে আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত সংগঠন। আমি তো মনে করি,আমার দায়িত্ব শেষ।

“আপনারা যে গুরুদায়িত্ব ’৮১ সালে দিয়েছেন,তারপর বারবার দিয়েছেন।”

কাউন্সিলরদের দাবি মতো আজীবন সভাপতি থাকা সম্ভব না- মন্তব‌্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি যখন আসি,আমার ছোট্ট দুটি শিশুকে স্নেহ বঞ্চিত করে বাংলার মানুষের কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলাম।

“আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছি আপনাদের কারণে, আওয়ামী লীগের কারণে।”

কাউন্সিলরদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “যে সম্মান আপনারা আমাকে দিয়েছেন, তা ভোলার নয়। আমি মনে করি,এই সম্মানটা থাকতে থাকতে বিদায় নেওয়াটা অনেক বেশি প্রয়োজন।”

শেখ হাসিনা এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কাউন্সিলর ‘না’, ‘না’ বলে চিৎকার করে ওঠেন।

চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলররা দুই হাত তুলে ‘না’, ‘না’ বলতে থাকেন।

এসময় শেখ হাসিনা বলেন, “আমি থাকব। কোনো পদে থাকি বা না থাকি… এই আওয়ামী লীগই তো আমার পরিবার। এই পরিবারের বাইরে তো আমি যেতে পরি না।

“কিন্তু, আমি চাই যে, আমি বেঁচে থাকতে থাকতে আপনারা নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলবেন। নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করবেন।”

১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

এরপর ১৯৮৭ সালের জানুয়ারিতে চতুর্দশ, ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর পঞ্চদশ,১৯৯৭ সালের মে মাসে ষোড়শ,২০০২ সালের ডিসেম্বরে সপ্তদশ,২০০৯ সালের জুলাইয়ে অষ্টাদশ এবং ২০১২ সালের ডিসেম্বর ঊনিশতম সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন হাসিনা।