উপমহাদেশের ‘বিরল’ নেতা শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে অংশ নিয়ে বিদেশি রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2016, 11:03 AM
Updated : 22 Oct 2016, 12:03 PM

তাদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের নেতা আখ্যা দিয়েছেন।

শনিবার সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের অন্যতম পুরনো ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটির ২০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে চীন, ভারত, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের অন্তত ৫৫ জন নেতা অংশ নেন।

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে তাঁর দল ও সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখছেন ভারতীয় জনতা পার্টি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিনয় প্রভাকর।

ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বিনয় প্রভাকর সহস্রবুদ্ধে শেখ হাসিনাকে উপমহাদেশের বিরল নেতা আখ্যা দেন।

তাকে জননেত্রী সম্বোধন করে বক্তব্য শুরু করে এই বিজেপি নেতা বলেন, “সেসব বিরল নেতাদের অন্যতম আপনি, যাকে সত্যিকার অর্থে জননেত্রী বলা যায়।

“আপনি সত্যিকারের জননেত্রী; শুধু আপনার দেশের নয়, বরং পুরো উপমহাদেশের ও বিশ্বের মানুষের।”

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও রাজ্যসভার বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম নবী আজাদ।

ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা গোলাম নবী আজাদও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ভারতে সব দল নির্বিশেষে তার অবস্থানকে সাধুবাদ জানায়।

শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা দেখতে চাই, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আপনি হবেন অন্যতম শীর্ষ নেতা; সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি থেকে এই উপমহাদেশকে রক্ষা করবেন।”

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার ঝেং জিয়াওজং।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস-মিনিস্টার ঝেং শিয়াওসং বলেন, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে এই সম্মেলনে যোগ দিতে পেরে তিনি আনন্দিত।

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে এবং স্থিতিশীলতা অব্যাহত আছে।”

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তার দল বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক গভীরে নিতে প্রস্তুত।

ভারতের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা পার্থ চ্যাটার্জি এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদী) নেতা বিমান বসু, নেপালের ড. রাম শর্মা মাহাত, শ্রীলংকার ধর্মমন্ত্রী এএইচ মোহাম্মদ হাশিম ও ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দিন নাথ দুঙ্গিয়েল সার্কভুক্ত দেশসমূহের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, রাশিয়া ও ইতালির নেতারাও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বক্তব্য দেন। তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানও দেন।

সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে সাধুবাদ

ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নয় ইতালীয় নাগরিকসহ ২২ জনের প্রাণহানির ঘটনা স্মরণ করে ইতালির ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ খালিদ চৌকি বলেন, তিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বকে বলতে এসেছেন যে, “সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা আজ এক হয়েছি। আপনাদের দেশের গণতন্ত্রের সমর্থন ও আমাদের সাধারণ মূল্যবোধগুলোর উন্নয়নে সহায়তা করব।”

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের এই যুগে একসঙ্গে দুই দেশের একসঙ্গে অনেক কিছু করার আছে।

‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন ইতালির এই নেতা।

ইউনাইটেড রাশিয়া উপ-সাধারণ সম্পাদক সের্গেই ঝেলেজনিয়াক এমপি এই কাউন্সিলকে তার জন্য ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ আখ্যা দেন।