ওরা আসেনি, আমরা যাব: বিএনপি

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2016, 08:33 AM
Updated : 21 Oct 2016, 10:35 AM

শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় সরকারি দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা খুশি হয়েছি আমাদেরকে দাওয়াত দিয়েছেন, আমরা আনন্দিত। আমাদের সম্মেলনে কিন্তু আপনারা আসেন নাই। সৌজন্যবোধ দেখিয়ে টেলিফোন করে দুঃখ প্রকাশও করে নাই।

“কিন্তু আমরা আপনাদের মতো হীনমন্য নই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে আপনারা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আপনাদের সম্মেলনে যাওয়ার জন্য বলেছেন। বিএনপি যে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই প্রমাণ আপনারা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন পাবেন ইনশাল্লাহ। আমরা যাব।”

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বৃহস্পতিবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর পর ‘দলীয় ফোরাম’ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে সাংবাদিকদের জানান মির্জা ফখরুল।

সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী বন্ধু দলের উদ্যোগে প্রয়াত নেতা আসম হান্নান শাহের স্মরণে আলোচনা সভায় অংশ নেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল উপলক্ষে ‘ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার’ সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে প্রশ্ন জাগে যে, এই সম্মেলনটা কী র‌্যাবের সম্মেলন, পুলিশ বাহিনীর সম্মেলন, বিজিবির সম্মেলন নাকি ডগ স্কোয়াডের সম্মেলন।

“আমরা দেখছি, একমাস ধরে এমন একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, এমন একটা আবহাওয়া তৈরি করা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। আজকে থেকে রাস্তা-ঘাটে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। গতকাল রাত থেকে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তার মানেটা কী?

“মনে হচ্ছে যেন সরকারের একটা সম্মেলন হচ্ছে। র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ তার সভাপতি হবেন আর ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া হয়ত সাধারণ সম্পাদক হবেন- এমন একটা ভাব।”

আলাল বলেন, “আওয়ামী লীগ একটা পুরনো রাজনৈতিক দল। এই দল এতো জনপ্রিয় একটা দল, তার সম্মেলন থাকবে উন্মুক্ত, তাকে দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ আসবে। সেখানে চেকপোস্টের দরকারটি কী ভাই? সেখানে বেনজীর সাহেব ও আসাদুজ্জামান সাহেবের এতো তেজষ্ক্রিয় কণ্ঠে বার বার বক্তব্য দিয়ে আকাশে-বাতাশে হুমকি দেওয়ার প্রয়োজনটা কোথায়? কাদেরকে হুমকি দিচ্ছেন- সেটাও আমরা বুঝতে পারছি না।

“সম্মেলন যদি উৎসবই হয়, কেন বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেনো এতো বিধিনিষেধ? কী এমন আকাম-কুকাম করেছেন যে, এত ভীত আপনারা। কারণটা কী? ভালো কাজ যদি করে থাকেন, সম্মেলন উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিৎ, সবকিছু।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের ‍উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আলোকসজ্জা দেখে মনে হচ্ছে, ঢাকা শহরের বিয়ে।

“আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল বলে নিজেকে দাবি করে। মুক্তিযুদ্ধের দল বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল যদি হয়ে থাকে, আমি দেখতে চাই সম্মেলনের মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টরের কমান্ডার ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানির ছবি থাকবে।

এই সম্মেলনে আমি ঘোষণা শুনতে চাই- আগামী ৭ নভেম্বরে বিএনপি যেখানে সমাবেশ করতে চাইবে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যদি চায়, বিএনপির অফিসের সামনে যদি চায়, সেখানে সমাবেশ করতে পারবে।”

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শরীফ মোস্তফা জামান লিটুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বক্তব্য দেন।