এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে গঠনতন্ত্রে একশ পদের বিপরীতে থাকা সাড়ে চারশ’র বেশি সহ-সম্পাদকের সঙ্গে নতুন করে এ পদ প্রত্যাশীদের মাঝে।
আগামী ২২-২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে নিয়মিত ভিড় হচ্ছে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ঘিরে।
কার্যালয়ের সামনের রাস্তা, অফিসের বাইরে বসার জায়গা ও সভাকক্ষে যাদের দেখা যায়, তারা অধিকাংশই উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ও এ পদ প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা।
সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই এই কার্যালয়ে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন তারা।
২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলের পর কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে উপ-কমিটির নেতাদের নাম প্রকাশ হয়। সে সময় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবে ৬৬ জনের নাম এসেছিল। এরপর কয়েক ধাপে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৬৭ জন হয়।
উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের।
গত মাসের শেষদিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি দপ্তর উপ-পরিষদের এক সভায় তিনি বলেন, “উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ব্যাঙের ছাতার মতো বেড়েছে। পার্টি অফিসের সামনে যার সাথে ধাক্কা লাগে সেই বলে আমি আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক। কিন্তু তারা যে উপ কমিটির সহ-সম্পাদক এটা তারা বলে না।”
উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবার একশ’র মধ্যে রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
তার ওই ঘোষণা এবার বাস্তবায়ন হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
কেন্দ্রীয় নেতাদের এই মনোভাবে উৎকণ্ঠায় পড়েছেন বর্তমানের সহ-সম্পাদকরা।
আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অধিকাংশই এই পদ ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা চাচ্ছেন উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের তালিকায় নিজের নাম লেখাতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহ-সম্পাদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শেষ পর্যন্ত যেহেতু কমিয়েই ফেলা হবে তবে কেন এত লোককে এই পদ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পদ না পেলেও দলের জন্য কাজ করে যাব।
“আর এখন যারা বাদ পড়বে তারা পরে কী পরিচয় দেবেন সেটা নিয়েও ভাবার দরকার আছে।”
ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, “যারা দীর্ঘ দিন ধরে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা, পরিশ্রম, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের মাধ্যমে বিভাগভিক্তিক মূল্যায়ন চাই আমরা।”
বর্তমান উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের কয়েকজনের যৌক্তিক মূল্যায়ন প্রত্যাশা করেছেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছাত্রলীগ করে আসা অনেকে।
এছাড়া রাজশাহী অঞ্চলের শাখাওয়াত হোসেন শফিক, মাজহারুল ইসলাম মানিক, আরিফুজ্জামান টুটুল ও খ ম হাসান কবির আরিফ; রংপুর অঞ্চলের ইকবালুর রহিম ও মাহমুদুল হাসান রিপন; বরিশাল অঞ্চলের ইসহাক আলী খান পান্না, শাহ আলম, এ কে এম আজিম ও বলরাম পোদ্দার; খুলনা অঞ্চলের সাইফুজ্জামান শিখর, অশিত বরুন বিশ্বাস ও বদিউজ্জামান সোহাগ; চট্রগ্রাম অঞ্চলের মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, শাহজাদা মহিউদ্দিন, মাহফুজুল হায়দার রোটন ও সালাউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরীর কথা উঠছে।