কমরেড অজয় রায় আর নেই

প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা অজয় রায় মারা গেছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2016, 06:37 AM
Updated : 19 Oct 2016, 12:00 PM

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জানান, সোমবার ভোর ৫টার দিকে ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় অজয় রায়ের মৃত‌্যু হয়।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অজয় রায় সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চেরও সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন। ৮৮ বছর বয়সী এই বাম নেতা দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক‌্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সিপিবির সঙ্গে ছিলেন অজয় রায়।

“তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক জানাচ্ছি।কমিউনিস্ট পার্টি ও মেহনতি মানুষের জন্য নানাভাবে অবদান রেখেছেন তিনি।”

ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাবেক সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই ছেলে-মেয়ে বিদেশে থাকায় কমরেড অজয় রায়ের মরদেহ আপাতত বারডেম হাসপাতালের হিম ঘরে রাখা হচ্ছে।

বুধবার সকালে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কফিন রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

গত শতকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা অজয় রায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন। পাশাপাশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভূমিকা রেখে গেছেন আজীবন।

১৯২৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জন্ম নেন অজয় রায়। ভারতের বারানসিতে থাকাকালে স্কুলজীবনেই বাম নেতাদের সংস্পর্শে এসে যুক্ত হন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে।

আইনজীবী বাবার মৃত‌্যুর পর ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে ফিরে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি নেন অজয়। এরপর কিশোরগঞ্জের বনগ্রামে দাদার বাড়িতে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির কাজে সক্রিয় হন।

সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস‌্য রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, পঞ্চাশের দশকে কমিউনিস্ট নেতা নগেন সরকার, ওয়ালী নেওয়াজ খান, মণি সিংহের সান্নিধ্যে আসেন অজয় রায়। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৩ সালে কমিউনিস্ট পার্টিতে ভাঙনের পর রূপান্তরিত কমিউনিস্ট পার্টি হয়ে অজয় রায় ও ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান গঠন করেন কমিউনিস্ট কেন্দ্র।

তবে সে সংগঠনও টেকেনি। ২০১০ সালের পর ‘সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তার নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন দেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম এই পুরোধা ব‌্যক্তি।

অজয় রায় সংবাদপত্রের কলাম লেখার পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, বিভিন্ন আন্দোলন এবং ভূমি ব‌্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখে গেছেন।