রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে আরেকটা গণঅভ্যুত্থান হবে: রব

রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বাতিল করা না হলে সরকারের বিরুদ্ধে ‘উনসত্তর সালের মতো গণঅভ্যুত্থান’ হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতীয় সামাতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2016, 11:38 AM
Updated : 27 August 2016, 11:38 AM

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “এতো প্রেম কেন? রামপালে করতে হবে কেন?

বাংলাদেশে আর কোথাও জায়গা নাই। আইল্যান্ডে যান, নিঝুম দ্বীপে যান, সেন্টমার্টিনে যান, জায়গার তো অভাব নাই।

“আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। এই প্রকল্প রামপাল থেকে সরান। তা না হলে উনসত্তরের মতো একটা গণঅভ্যুত্থান হবে সরকার পতনের জন্য। রামপাল আন্দোলনে আপনার সরকার উড়ে যাবে।”

নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘সুন্দরবন রক্ষা কর, পরিবেশ বাঁচাও এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর যাবে না’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সাবেক মন্ত্রী আসম আবদুর রব বলেন, “ভারতে ২৬ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার প্রকল্প ছিল, তারা অনুমতি দেয় নাই। আর আমাদের এখানে দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার।এই বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালে হলে সুন্দরবনের বাঘ থাকবে না, হরিণ থাকবে না, পশু-পক্ষী থাকবেন না- এটা একটা মরুভুমিতে পরিণত হবে। গাছ-গাছড়া সমস্ত মরে যাবে।

“এই প্রকল্প অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।”

সুন্দরবনের কাছে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে তেল-গ্যাস কমিটির ঘোষিত ২৪ অগাস্ট ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে তিনি বলেন, “সকলকে অনুরোধ করব, ‘চলো চলো, রামপাল চলো’- এই শ্লোগান নিয়ে আমরা কিছু দিনের মধ্যে আমরা রামপালে যাত্রা শুরু করবো। আমরা দেখি সেখানে আমাদের কিভাবে ঠেকায়?”

সরকার জঙ্গিবাদের ইস্যুকে টিকিয়ে রাখতে চায় অভিযোগ করে রব বলেন, “আগামী নির্বাচন যাওয়ার আগ পর্যন্ত জনগণের কাছে সমর্থন আদায়ে জন্য একে টিকিয়ে রাখতে আজকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আসলে তারা জঙ্গি দমন করতে চায় না। এক-একটা মামলা দীর্ঘদিন পর্যন্ত তারা (সরকার) ঝুলিয়ে রেখেছে।”

নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নার ওপর সরকারের প্রতিহিংসার কথা উল্লেখ করে আসম আবদুর রব বলেন, “মান্না আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে এসে নাগরিক ঐক্য করেছেন, সেই প্রতিহিংসায় প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মান্নাকে কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।

“আমরা মনে করি, মান্না সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটা তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে চেয়েছেন সেজন্য সরকার তাকে জেলে ঢুকিয়েছে। এই বর্বর, ফ্যাসিবাদী নির্যাতন। সরকারকে বলব, এটা বন্ধ করুন।

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলব, মান্না জাতীয় নেতা, তাকে মুক্তি দিন। তা না হলে মান্নার মুক্তির আন্দোলন ও রামপালের আন্দোলন মিলে আপনার সরকার কিন্তু উড়ে যাবে। আমরা কেউ ঘরে বসে থাকব না।”

নাগরিক ঐক্যের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এস এম আকরামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাবেক গোলাম মওলা রনি বক্তব্য রাখেন।