‘পনের-একুশে অগাস্টের হত্যাকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে’

পনের ও একুশে অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2016, 06:02 PM
Updated : 20 August 2016, 06:02 PM

শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “পনের অগাস্টে পরিবারসহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, একুশে অগাস্টে গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী হত্যা… কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা পরিবারের বিরুদ্ধে নয়।

“এই সবগুলো হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। দেশকে আবারও পাকিস্তান বানানোর জন্যই এ হত্যাকাণ্ড।”

শিল্পমন্ত্রী আমু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতেই ২১ অগাস্টে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। যারা দেশের স্বাধীনতা চায় না, তারাই শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল।

“…পনের অগাস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করে পাকিস্তানের সাথে একটি কনফেডারেশন তৈরি করা।”

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতক চক্র এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে জনগণের মন থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “…কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার কালজয়ী আদর্শ ও নেতৃত্বের জন্য ষোল কোটি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে রয়েছেন।”

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত ও নিহতদের স্মরণে এই আলোচনা সভা ও চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করে যুবলীগ।

এতে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গি হামলা ও নাশকতার ঘটনায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী।

তিনি বলেন, “পঁচাত্তরের পনের অগাস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন যেমন জিয়াউর রহমান, তেমনি হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা, শোলাকয়িা হামলাসহ সকল জঙ্গি-নাশকতার পরিকল্পনাকারী হলো তারেক-খালেদা জিয়া।

“জিয়া যেমন বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে, পরনির্ভর এবং ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে পঁচাত্তরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিল। তেমনি খালেদা-তারেক বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে জঙ্গিদের দিয়ে সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটাচ্ছে।”

২০০৪ সালের একুশে অগাস্টে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বোমা হামলা হয়, যাতে আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও দলটির নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়।

এ ঘটনায় প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে মামলা ‘ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য’ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের নির্দেশে সিআইডি জজ মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে বলে এক পর্যায়ে মামলার অধিকতর তদন্তে বের হয়ে আসে।

বর্তমানে একুশে অগাস্টের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় তৃতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর তা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

জজ মিয়া প্রসঙ্গ টেনে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক বলেন, “বিএনপি এই ঘটনা ধামা-চাপা দিতে জর্জ মিয়ার নাটক সাজায়। পরবর্তীতে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে তারেক ছিল একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড।”

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, মাহবুবুর রহমান হিরণ, যুগ্ম-সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলুসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।