গুলশান অভিযান নিয়ে প্রশ্ন নেই, কল্যাণপুর নিয়ে সংশয় রিজভীর

রাজধানীর কল্যাণপুরে পুলিশের অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হওয়ার ঘটনায় সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন, জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না কেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 11:16 AM
Updated : 29 July 2016, 11:38 AM

গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ‘জাতির প্রশ্ন’ তুলে ধরে তিনি বলেন, “গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন উঠেনি। কল্যাণপুরের ঘটনা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে কেন?

সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, “আপনাদের আচরণের কারণেই জঙ্গিবাদী অশুভ শক্তির উত্থান হচ্ছে। জঙ্গিদের জীবিত ধরা হচ্ছে না কেন- এটা এখন জাতির প্রশ্ন। কেন জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িত অন্যদের পাকড়াও করা হচ্ছে না?”

কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযানে গিয়ে সোমবার রাতে হামলার মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে মঙ্গলবার ভোরে সেখানে সোয়াটের বিশেষ অভিযানে নিহত হন নয় জঙ্গি।

তাদের মধ্যে আটজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন রংপুরের পীরগাছার শাহজাহান কবিরের ছেলে রায়হান কবির ওরফে তারেক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বলা হচ্ছে, জুলাইয়ের শুরুতে গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিদের গাইবান্ধার চরে নিয়ে তিনিই প্রশিক্ষণ দেন।

আশুলিয়ায় পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশির সময় ছুরিকাঘাতে কনস্টেবল হত্যার ঘটনাতেও রায়হান জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

বাকিদের মধ্যে তারা হলেন- দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ (২৩), পটুয়াখালীর আবু হাকিম নাইম (২৪), ঢাকার ধানমণ্ডির তাজ-উল-হক রাশিক (২৫), ঢাকার গুলশানের আকিফুজ্জামান খান (২৪), ঢাকার বসুন্ধরার সেজাদ রউফ অর্ক (২৪), সাতক্ষীরার মতিউর রহমান (২৪) এবং নোয়াখালীর জোবায়ের হোসেন (২২)।

এদের মধ্যে সেজাদ রউফ যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী। গত ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ এই যুবক গুলশানে ক্যাফেতে হামলাকারী নিবরাজ ইসলামের বন্ধু ছিলেন; নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। আকিফুজ্জামান, অর্ক এবং রাশিকও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আর রায়হান, আব্দুল্লাহ ও নাঈম পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়।

সাইফুজ্জামান খানের ছেলে আকিফুজ্জামান পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মোনায়েম খানের নাতি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে সামরিক বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন।

এর মধ্যে কল্যাণপুরের নিহতরা আসলেই জঙ্গি ছিল কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিএনপি।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ১৯৭৫ পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “জঙ্গিবাদীরা যাকে অনুসরণ করতে পারে, সেই লোক আজকে সরকারের মুখপাত্র। সেই সন্ত্রাস, জঙ্গি এবং গণতন্ত্রের শত্রু হিসেবে তারা (হাসানুল হক ইনুরা) এক সময়ে কাজ করেছে। আজকে ইনুরা জঙ্গিবাদ দমনের নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বক্তব্য রাখেন।

“আজকে যদি কোনো দানব, আজকে যদি কোনো শৃগাল মুরগীর নিরাপত্তার জন্য আফসোস করে, এটা যেমন উপহাস যোগ্য হবে, আজকে হাসানুল হক ইনু জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, এটাও  উপহাসযোগ্য।’