শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ’ আয়োজিত এক সভায় তিনি বলেন, “জঙ্গিদের যখন নির্মূল করা হয়, তারা বলেন, এরা আসলে জঙ্গি কি না; আর তাদের মারার কী প্রয়োজন ছিল। এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
“জঙ্গিদের সাথে নিয়ে তারা জঙ্গিবিরোধী জাতীয় ঐক্য চায়। তারা প্রতারক, তারা রাজনীতির নামে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে।”
গুলশানে জঙ্গি হামলার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলে তা নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সারা দেশে জঙ্গিবিরোধী ঐক্য এরইমধ্যে সৃষ্টি হয়ে গেছে।
তবে জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক সংকট আখ্যা দিয়ে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় সব দল-মতের অংশগ্রহণে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা।
এরমধ্যে গত সোমবার রাতে কল্যাণপুরে একটি জঙ্গি আস্তানায় পুলিশ অভিযানে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে। পরে ভোরে সোয়াটের নেতৃত্বে সেখানে অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হওয়ার কথা জানায় পুলিশ।
এ ঘটনা নিয়ে সন্দিহান বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় বলেন, “কল্যাণপুরে কী ঘটনা হয়েছে, আমরা ভালো করে জানি না। যদি জঙ্গি হয়, সামনা-সামনি যুদ্ধ করে তারা মরার কথা। আজকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বলছে, পেছন দিয়ে সবার গুলি। আমরা জানি না কী ঘটনা হয়েছে।”
সভায় বিএনপি নেতাদের এমন অবস্থানকে শুধু ‘ভাওতাবাজি’ শব্দ দিয়ে বোঝানো সম্ভব নয় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান বলেন, “এটা শুধু ভাওতাবাজি নয়, জাতির সঙ্গে শুধু প্রতারণা নয়, জাতির সঙ্গে শুধু মশকরা নয়, বাংলা ভাষায় অন্য কোনো শব্দ থাকলে সেটি ব্যবহার করতে পারতাম।”
বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘উদ্বিগ্ন’ হওয়ায় তাদের ‘ধন্যবাদ জানানোর’ পাশাপাশি ‘তারা কেন জঙ্গিদের নিয়ে কথা বলছেন না’- সে প্রশ্নও তোলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
“কিন্তু অতি সতর্কতা এবং না বুঝে কথা বলা- সেটা সঠিক নয়। কিন্তু কোন সময় আপনারা আন্দোলন করছেন। দেশ যখন জঙ্গিবিরোধী আন্দোলন করছে, দেশের মানুষ যখন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার তখন আপনাদের মুখে জঙ্গিদের নিয়ে কোনো কথা নাই। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আপনারা ব্যস্ত।
“আপনারা জঙ্গিবিরোধী সমাবেশ না করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে যাচ্ছেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে। অবশ্যই আপনাদের এ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, অবশ্যই দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু সময় কি এটি?”
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি দেশে ‘গণ্ডগোল সৃষ্টি করার’ জন্য বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে যায় বলেও অভিযোগ করেন হাছান মাহমুদ।
“জঙ্গিবিরোধী সমাবেশ না করে বরং বাংলাদেশে গণ্ডগোল পাকানোর জন্য, ঢাকা শহরে গণ্ডগোল পাকানোর জন্য রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে চান। আপনাদের উদ্দেশ্য কী সেটা নিয়েও এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”