এছাড়া সাম্প্রতিক ‘ক্রসফায়ারের’ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা বলেন, “আমরা বলেছি, জঙ্গি যারা আছে, জঙ্গি ধরেন। আমরা জঙ্গি ধরার পক্ষে, জঙ্গি দমন আমরা সমর্থন করি।
“কিন্তু এই জঙ্গি সব আওয়ামী লীগের সঙ্গে। জঙ্গিদের দল হল আওয়ামী লীগ। এদের কাছে অস্ত্র পাওয়া যাবে, এদের কাছে বন্দুক, গোলা বারুদ, দেশি-বিদেশি সব রকমের অস্ত্র পাওয়া যায়।”
তিনি দাবি করেন, দেশে জঙ্গিদমনের নামে যে সাঁড়াশি অভিযান হয়েছে, তাতে গ্রেপ্তারদের প্রায় সকলেই ‘সাধারণ মানুষ ও বিএনপির নেতা-কর্মী’।
“ওই অভিযানে ১৫ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এদের মধ্যে অধিকাংশই নিরীহ সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে তিন হাজারের বেশি বিএনপির নেতাকর্মী। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তি চাই।”
বিএনপি সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল হয়।
নিজের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, “মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সময়ে আমার মামলা ছিল ৫টা, হাসিনার মামলা ছিল ১৫টা। নাইকো মামলা একসঙ্গে আছে। কাজেই সেই নাইকো মামলায় হাসিনার অভিযোগ উঠে যায়, আমার মামলা তারা কী করে চালায়?
“হাসিনার সময়ে তার নির্দেশে নাইকো চুক্তিসহ সব কিছু হয়েছে। আমার সেখানে কোনো ভূমিকাই নাই। তারপরও তার মামলা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেবল তাই নয়, হাসিনার ১৫টি মামলা কীভাবে উঠে যেতে পারে? তার মামলা উঠে গেলে অন্য কারো মামলা থাকতে পারে না।”
এরই মধ্যে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়েছেন বিএনপি সভানেত্রী।
‘বিচার বিভাগে সরকার হস্তক্ষেপ করছে’ মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “বিচার বিভাগ বলেছে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সাদা কাপড় পরে কাউকে অ্যারেস্ট করা যাবে না। কিন্তু এখন নিয়ত সাদা কাপড় পরে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং মানুষকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
“ক্রসফায়ার আদালত নিষিদ্ধ করেছে। প্রমাণ না হলে সেটা ক্রসফায়ার হতে পারে না। যেখানে একটা লোককে আদালত থেকে ১০ দিনের রিমান্ডে এনেছে, সেখানে ডিবি (গোয়েন্দা অফিস) কীভাবে হাতকড়া পরা অবস্থায় তাকে গুলি করে ফেলে দেয়? আর বলা হয়, ক্রসফায়ার। এটা ক্রসফায়ার নয়, এটা হত্যা করা হয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এর জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী।”
বক্তব্যের পর সদ্য কারামুক্ত বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম আবদু্ল্লাহ, সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজে সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমদকে নিয়ে একই টেবিলে বসে ইফতার করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এছাড়া ছিলেন বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর মসিউল আলম, সুপ্রিম কোর্টের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে কবি আল মুজাহিদী, নুরুল হুদা, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, মুন্সি আবদুল মান্নান, আব্দুস শহীদ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদের স্ত্রী কবি ফেরদৌসী মাহমুদ, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, তৈমুর আলম খন্দকার, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, রফিক শিকদার, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ২০ দলীয় জোটের খেলাফতে মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া অংশ নেন।