বিএনপি নেতা রফিকুল-মান্নানের মুক্তিতে ‘বাধা নেই’

নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র এম এ মান্নান ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2016, 02:13 PM
Updated : 23 June 2016, 02:36 PM

বিচারপতি শওকত হোসেন ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ তাদের পৃথক জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর শাহ আলী থানায় করা মামলায় রফিকুল এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় করা মামলায় মান্নান জামিন পেয়েছেন।

এখন অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানো হলে তাদের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আদালতে রফিকুল ইসলাম মিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী; সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।

মান্নানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আবু হানিফ ও জাফর আলম; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান মোহন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুর রহমান চৌধুরী টিকু। 

রফিকুলের জামিন

নাশকতার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন, শাহ আলী, মতিঝিল, মিরপুর, পল্লবী ও যাত্রাবাড়ী থানায় ২৮টি মামলা রয়েছে।

চলতি বছরের ১৬ মে বিচারিক আদালতে আত্নসমর্পণ করে জামিন চান তিনি। সেদিন আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

রফিকুলের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২৮ মামলার মধ্যে ৩১ মে সাতটিতে ও ৯ জুন পাঁচটিতে হাই কোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। শাহ আলী থানার মামলাসহ হাই কোর্ট থেকে ১৩টি মামলায় জামিন পেলেন। নিম্ন আদালত থেকে তিনি ১৪টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। অপর এক মামলায় অভিযোগপত্রে তার নাম না থাকায় জামিনের প্রয়োজন নেই।

“কোনো মামলায় তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মিয়া ৪৬ বছর ধরে আইন পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে তার বয়স ৭৩ বছর।

“তিনি বক্ষব্যাধিসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। এ কারণে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসব দিক বিবেচনায় তাকে জামিন দেওয়া হয়।”

মান্নানের জামিন

নাশকতার অভিযোগে জয়দেবপুর থানার মামলা জামিন পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার না দেখালে মান্নানের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তার আইনজীবী মো. আবু হানিফ।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মান্নান এর আগে নাশকতার ১৯টি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এক বছরের বেশি কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের জামিন নিয়ে গত ২ মার্চ মুক্তি পান। ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি গ্রেপ্তার হন।

জামিনে কারামুক্ত হওয়ার দেড় মাসের মাথায় নাশকতার আরও দুই মামলায় গত ১৫ এপ্রিল তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত বছর ঢাকার বারিধারার বাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাশকতার দুটি মামলার অভিযোগপত্রে নাম আসার পর ১৯ অগাস্ট মান্নানকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট গত ১১ এপ্রিল সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাস স্থগিতের পাশাপাশি রুল দেয়।

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমানের করা আবেদন ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ ‘নো অর্ডার’ দেয়। ফলে মান্নানের সামিয়ক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল থাকে।

পরবর্তীতে মান্নানকে আবারও মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় জানিয়ে তার আইনজীবী মো. আবু হানিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়র মান্নানকে ১৫ এপ্রিল গ্রেপ্তারের পর চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চারটির মধ্যে তিনটিতে গত সপ্তাহে ও জয়দেবপুর থানার মামলায় বৃহস্পতিবার তিনি জামিন পেলেন।

“এছাড়া দুদকের একটি মামলা আছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানো হলে তার কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।”