বিবিসি বাংলাকে সতর্ক হওয়ার অনুরোধ আ. লীগের

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পাটির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বৈঠকের খবরকে ভিত্তিহীন দাবি করে বিবিসি বাংলাকে ভবিষ্যতে এ ধরনের খবর পরিবেশনে সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2016, 04:08 PM
Updated : 12 June 2017, 04:33 PM

রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ একথা জানান।

তিনি বলেন, “সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে ইসরায়েলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির বৈঠকের যে সংবাদটি বিবিসি বাংলার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে অসত্য, কল্পিত, নির্জলা মিথ্যাচারে পরিপুষ্ট।

“আমরা এই প্রতিষ্ঠানটির এহেন ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনায় ক্ষুদ্ধ, ব্যথিত, হতাশ ও মর্মাহত। আমরা মনে করি এ খবরটি প্রকাশের আগে তাদের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা ছিল। আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশনার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।”

ওই খবর নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিবিসি বাংলার কাছে প্রতিবাদ-পত্র পাঠানো হয়েছে জানিয়ে হানিফ বলেন, “তাছাড়া বিসিসি বাংলার অনলাইনের সম্পাদকের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, এই সংবাদটি নিয়ে উনারা তদন্ত করছেন। যাতে করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয়। আমরা আশা করি, প্রকৃত ঘটনা বিবিসি জনগণের সামনে নিয়ে আসবে।”

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির ওই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের একাধিক ছবি গণমাধ্যমে আসার পর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছে পুলিশ।

এরইমধ্যে গত শুক্রবার সাফাদির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা অনলাইন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে সাফাদি দাবি করেছেন।

তার ওই দাবি নাকচ করে জয় রোববার সকালে ফেইসবুকে লিখেছেন, সাফাদির সঙ্গে কোথাও তার বৈঠক হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যেও জয়ের সঙ্গে সাফাদির কোনো বৈঠক হয়নি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ।

তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কখনোই মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বৈঠক হয়নি।

বৈঠকের খবরকে ‘নাটক’ আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমানকে তার রচয়িতা হিসেবে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে।

“আমাদের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, বিবিসি বাংলার অনলাইনে জ্যাকব মিল্টন নামে যে প্রতিবেদকের নাম উল্লেখিত সেই জ্যাকব মিল্টন নামে বিবিসি অনলাইনে কোনো প্রতিবেদক নেই। অথচ তার নামেই এটি প্রকাশিত হয়েছে।”

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জাহিদ এইচ সরদার সাদী এর সঙ্গে জড়িত দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ছয়জন মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতি করায় তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল।

“সময়ের ব্যবধানে জাহিদ এইচ সরদার সাদী পুনরায় প্রতারণামূলক কাজে লিপ্ত হয়েছেন। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে সম্প্রতি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর এজেন্ট মেন্দি সাফাদির সাথে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীসহ বিএনপির ষড়যন্ত্রকারীদের রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্রের দায় থেকে রেহাই পাবার হীনমানসে এই নতুন গল্পের অবতারণা করেছেন।”

লিখিত বক্তব্যে তারেক রহমানের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, বাংলাদেশে যা কিছু খারাপ, তার বেশিরভাগের জন্যই তারেক ও তার সহযোগীরা দায়ী।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা সুজিত রায় নন্দী।