জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “১৯৭৯ সালে যে সংসদ নির্বাচন হলো, সেখানে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। সবার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে।
“আমরা বলি, ওই একটা পার্লামেন্ট... সেটাকে রংধনু পার্লামেন্ট বলা হত। প্রায় সব রাজনৈতিক দলের লোক সেখানে নির্বাচিত হয়েছিলেন।”
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনী থেকে রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান।
সামরিক সরকারের অধীনে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ২০৭ আসনে বিজয়ী হয়। ওই সংসদে আওয়ামী লীগ, সিপিবি, ন্যাপ-মুজাফফর, সাম্যবাদী দল, ইসলামি ডেমোক্রেটিক লীগ, মুসলিম লীগ, জাসদ প্রভৃতি দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন।
দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
১৯৮১ সালে ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন জিয়াউর রহমান।
জিয়াকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’ অভিহিত করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “তিনি ক্ষমতায় এসে সামরিক শাসন প্রত্যাহার করেছেন, ক্রমান্বয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিলেন।
“যে আওয়ামী লীগ বাকশালে বিলীন হয়ে গিয়েছিল, সেই দলকে নতুন করে দল গঠনের সুযোগ করে দিয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি (জিয়া) জনগণের ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হলেন।”
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সেই নির্বাচনের তুলনাও টানেন বিএনপি নেতা নজরুল।
“২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো ‘আমি আর মামুরা মিলে নির্বাচন’- এটা শহীদ জিয়া করেন নাই। সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করেছেন, সবার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হয়েছেন।”
চলমান ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় প্রাণহানির জন্য সরকারকে দায়ী করেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, “যখন দেশে গণতন্ত্র নেই, অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায়, যখন আমাদের নির্বাচিত মেয়ররা কারাগারে, যখন নির্বাচনের নাম প্রহসন চলছে।
“একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, এই পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে মন্দ নির্বাচন হলো এবারের ইউপি নির্বাচন, যেখানে ১০১ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।”
নজরুল আরও বলেন, “প্রতিদিন পত্রিকায় দেখছি, মানুষ নিহত হওয়ার সংবাদ। কেউ নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে, কেউ দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে- কোনো না কোনো দুঃসংবাদ আছেই।
“এই দুঃসংবাদের সেইদিনই অবসান হবে যেদিন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে। আর সেজন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।”
সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মুনির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম পটু, জিয়াউল হক শাহিন, মারুফ আল হাসান, আনু মো. শামীম, জহির রায়হান জসিম, ইয়াসীন আলী, সাহাবুদ্দিন মুন্না, লিটন মাহমুদ, রফিক হাওলাদারসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।