ট্রানজিটের নামে অল্প দামে সার্বভৌমত্ব বিক্রি: রিজভী

ভারতকে ‘অল্প দামে’ ল্যান্ড ট্রানজিটের সুবিধা দিয়ে সরকার ‘নিজের আত্মাকে’ বিক্রি করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2016, 12:55 PM
Updated : 27 May 2016, 12:55 PM

শুক্রবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “কত নির্লজ্জ হতে পারে এই সরকার! তারা দিনে দিনে সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে দিচ্ছে। টনপ্রতি মাত্র ১৯২ টাকা মাশুল দিয়ে ভারতের গাড়ি যাবে বাংলাদেশের উপর দিয়ে!”

বাংলাদেশের ট্রানজিট কমিশন ১০৫৮ টাকা ফি নির্ধারণ করেছিল জানিয়ে রিজভী বলেন, “সেটাকে অগ্রাহ্য করে সরকার নিজের ইচ্ছায়, নিজের ক্ষমতায় ১৯২ টাকা করেছে।”

কলকাতা থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় পণ্য নিতে সম্প্রতি দুই দেশের নৌ প্রটোকলের আওতায় প্রথম চালান হিসেবে ১৫ মে আগরতলায় গিয়েছে এক হাজার টন ঢেউটিন।

কলকাতা থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে এবং এরপর আশুগঞ্জ থেকে সড়কপথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আগরতলায় পণ্য নেবে ভারত।

বিএনপি নেতা রিজভী কম শুল্কে ভারতকে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দেওয়াকে দেশটির প্রতি বাংলাদেশের ‘গভীর প্রেম’ বলে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বলেন, “কী গভীর প্রেম? এ কারণে নামকাওয়াস্তে ১৯২ টাকা ফি দিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জাম যাবে ভারতে। এই যে আখাউড়া থেকে একেবারে আগরতলা পর্যন্ত ল্যান্ড ট্রানজিট দেওয়া, এটা একেবারে দুরভিসন্ধিমূলক এবং এই অল্প দামে দেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দেওয়া।”

ট্রানজিটের নামে ভারতকে এমন সুবিধা দেওয়ার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, সরকার নিজের আত্মাকে বিক্রি করে দিয়েছে পাশ্বর্বতী দেশের কাছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করে আজকে ট্রানজিটের নামে সার্বভৌমত্ব দুর্বল করার যে গভীর চক্রান্ত হচ্ছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন এই আলোচনার আয়োজন করে।

ট্রানজিটের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এই যে ১৯২ টাকা ফি, আসলে এটা মালামালের ফি না। এই ফিটা অন্যভাবে দেওয়া, টাকাতে না। একটি দেশের ভোটারবিহীন সরকারকে আনুগত্য দেওয়া হচ্ছে।”

‘ট্রানজিট নয়, বরং করিডোর দেওয়া হয়েছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “একই দেশের মালামাল আমার দেশ দিয়ে আবারও একই দেশে যাবে, এটি ট্রানজিট না, এটি করিডোর। আর করিডোর মানেই হচ্ছে বিপর্য্য়কর অবস্থা। এটার জন্য বহুদেশে যুদ্ধ বিগ্রহ হয়েছে।”

সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।