বঙ্গবন্ধুর কবর রাজধানীতে চান জাফরুল্লাহ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তৎকালীন সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকারীরা তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় কবর দিয়ে ‘অন্যায়’ করেছে বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বিএনপি ঘরানার পেশাজীবী হিসেবে পরিচিত জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2016, 03:17 PM
Updated : 23 May 2016, 03:19 PM

তার কবর রাজধানীতে স্থানান্তরের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সোমবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমার মনে হয় ৭৫ সালে সামরিক বাহিনীর যারা ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন, তারা অত্যন্ত একটা ভুল করেছিলেন, তারা অন্যায় কাজও করেছিলেন।

“তা হচ্ছে শেখ মুজিবুরকে টুঙ্গীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া। আজকে যদি এখানে তার (শেখ মুজিবুর রহমান) কবর থাকতো তাহলে হাজার হাজার মানুষের জিয়ারত পেতেন। আর তা না হলে কী হয়, দলীয় লোকের লোক দেখানো হাজিরা পায়।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট রাজধানীর ধানমণ্ডির বাড়িতে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিক। তাকে দাফন করা হয় টুঙ্গীপাড়ায়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক সাদেক খান স্মরণে আয়োজিত সভায় জাফরুল্লাহ বলেন, “একজন জাতীয় নেতাকে ছোট করার অধিকার আমাদের কারও নাই। আমার কাছে মনে হয়, এসব জায়গাতে বরঞ্চ খুব সহজে সবাই যাতে তার দর্শন পায়, সেরকম জায়গাতে কবর ... ।

“ঢাকা থেকে অন্য জায়গায় কবর নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আমি দেখি না। বরং এখানে নিয়ে আসাটা হবে যুক্তিসঙ্গত কাজ।”

এ প্রসঙ্গে শবে বরাতে বনানী কবরস্থানে এক আত্মীয়র কবর জিয়ারত করতে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

“গতকাল শবে বরাতের রাতে বনানী কবরাস্থানে আমরা এক আত্মীয়র কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। এরপর সাদেক ভাইয়ের (সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক) কবরের সামনেও গিয়ে দাঁড়ালাম।

“ফেরার পথে ১৯৭৫ সনে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যারা মারা গেছেন, তাদের কবরের সামনেও গিয়ে দাঁড়ালাম। নজরুল ইসলাম (প্রয়াত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি), তাজউদ্দিন আহমদ (প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী), মনসুর আলী (প্রয়াত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) কবরের পাশে দাঁড়ালাম। হাজার হাজার লোক জিয়ারত করছেন।”

সভায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সাদেক খানের দেওয়া ‘দিকনির্দেশনা’র প্রশংসা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “আমরা যে ট্রাস্ট করলাম, এর অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন উনি। গত ১০ বছর এই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন। ... যখনই হতাশ হয়েছি, হাসি দিয়ে বলতেন- সমস্যাটা কী? এতো মন খারাপের কী আছে? সব ঠিক হয়ে যাবে।” 

গত সোমবার ৮৩ বছর বয়সে মারা গেছেন সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সাদেক খান।

রাজনৈতিক দর্শনে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী সাদেক খানের সঙ্গে বিএনপির সখ্য ছিল। ২০১২ সালে ‘বাংলাদেশ গণশক্তি দল’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি।