বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলছেন, বর্তমান সরকারের আমলে ‘ইসলাম নিয়ে কটূক্তি’ হচ্ছে; আবার শাস্তি দেওয়া হচ্ছে আইন আদালত ‘উপেক্ষা করে গডফাদারের কায়দায়’।
রোববার বিকালে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মুসলমানদের প্রাণের চাইতে প্রিয় যে নবী তাকে এই শেখ হাসিনার আমলে বারবার কটূক্তি করা হয়েছে, বারবার বিভিন্নভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা মানুষের হৃদয়ে কঠিনভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এটা প্রগতির লক্ষণ নয়, এটা সেক্যুলারিজম হতে পারে না।
মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান শবে বরাত উপলক্ষে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন রুহুল কবির রিজভী। বক্তব্যের একটি অংশ জুড়ে ছিল এক সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া নারায়ণগঞ্জের প্রসঙ্গ।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একদল লোক গত ১৩ মে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে মারধর করে। পরে তাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করান প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্য সেলিম ওসমান।
স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ শিক্ষক শ্যামলকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও তদন্তে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি পুনর্বহাল করা হয় ওই শিক্ষককে।
ইতোমধ্যে সমাজের নানা পেশার মানুষ ওই ঘটনার জন্য সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন; ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও সমালোচনা করেছেন।
সাংসদ সেলিম ওসমানসহ যাদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে একটি একটি রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
সেলিম ওসমান অবশ্য বলেছেন, ফাঁসি হলেও ওই ঘটনার জন্য তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
আইন নিজস্ব পথে চলছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “আজকে আইন আইনের পথে চলছে না। জেলায় জেলায় গডফাদার তৈরি হয়েছে, তাদের হাতে আইন। আজকে জনগণকে বাধ্য করছেন, তাদেরকে মান্য করতে, আজকে জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে, তাদেরকে মান্য করতে। কারণ জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই, তারা জনগণকে থোড়াই কেয়ার করেন।”
দেশের বর্তমান অবস্থাকে সংকটজনক আখ্যায়িত করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “আজ এদেশে কোনো মানুষের নিরাপত্তা নেই। সকল ধর্মের গুরুরা আজকে নিহত হচ্ছে। দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলমান। তাদের প্রিয় নবী যারা তাদের জীবনের থেকে তাকে বেশি ভালোবাসে, আজকে তাকে বারবার কটূক্তি করা হচ্ছে।”
ধর্মনিরপেক্ষতার নামে দেশে ধর্মহীনতা চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
অন্যদের মধ্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক শিকদার, শহীদুল ইসলাম বাবুল, রফিক শিকদার, তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির খান, শাহ নেসারুল হকসহ শতাধিক নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
পরে দেশের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন উলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক।