বিচারপতিদের ইচ্ছামতো কাজ করাতে অপসারণ আইন: রিজভী

উচ্চ আদালতের বিচারকদের সরকারের ইচ্ছামতো কাজ করাতে তাদেরকে অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে আইন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2016, 07:58 PM
Updated : 5 May 2016, 07:58 PM

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে আইনটি পাস করার উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বানও জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী।

উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

অসদাচরণের জন্য উচ্চ আদালতের কোনো বিচারককে কীভাবে অপসারণ করা যাবে, সে প্রক্রিয়া নির্ধারণে আরেকটি আইনের খসড়ায় সম্প্রতি সম্মতি দেয় মন্ত্রিসভা।

এদিকে বৃহস্পতিবারই বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছে হাই কোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ। আদালত আমাদের আপিল করার জন্য সার্টিফিকেট দিয়েছে। এখন এটি আপিল হিসেবে গণ্য হবে। এই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে রোববারই আমরা চেম্বার আদালতে যাব।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “এই আইন প্রণয়নের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতার মসনদকে নিষ্কণ্টক করা এবং তাদের প্রতিপক্ষকে দুরমুজ করা। বিচারপতিদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ও তাদের ওপর নগ্ন আগ্রাসন করতেই এমন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।

“আমরা মনে করি, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের এই আইন পাস হলে সংবিধানের সর্বশেষ স্তম্ভটুকুও বিলীন হয়ে যাবে।”

বিএনপির পক্ষে সরকারকে আইনটি পাস করানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, “বিচারপতিরা যেন সরকারের ইচ্ছামতো কাজ করে সেজন্য এই আইন করা হচ্ছে। এটা পাসের মাধ্যমে সরকার পুরোপুরি বিচারপতিদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই ভীতিকর। চাপ সৃষ্টির জন্য এটি করা হচ্ছে।”

আইনটি কার্যকর হলে ন্যায়বিচার ‘শিকেয় উঠবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে। এটি স্বাধীন বিচার কার্য পরিচালনায় বাধার সৃষ্টি করবে।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, “আইনটি পাসের মাধ্যমে সরকার বিচার ব্যবস্থাকে বিরোধী দলসহ গণমাধ্যম এবং গণতন্ত্রে স্বীকৃত সব অধিকারকে আরও নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে সক্ষম হবে।”

উচ্চ আদালতে মন্ত্রীদের শাস্তি হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “সম্প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের তিনজন মন্ত্রী উচ্চ আদালতে দণ্ডিত হওয়ায় সরকারের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

“আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি করে বিচারপতিদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতেই এই নতুন আইন সংসদে পাস করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জনগণ মনে করে।”