মনিটরিং সেন্টার মিডিয়ার জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা: বিএনপি

বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধে সংবাদ পর্যবেক্ষণের জন্য ‘মিডিয়া মনিটরিং সেন্টার’ তৈরি করলে তা গণমাধ্যমের জন্য ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হবে বলে এই উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2016, 08:15 AM
Updated : 5 May 2016, 08:30 AM

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ভোটারবিহীন সরকারের তরফ থেকে গণমাধ্যমের ওপর প্রতিনিয়তই নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন চলছে। এর ওপর আরও বেশি মাত্রায় গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতেই সরকার মিডিয়া মনিটরিং সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

“এটা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে, সরকার কর্তৃক মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের সকল ঘৃণ্য প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এসব প্রচেষ্টা থেকে তাদের সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”

বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধে সরকারের পদক্ষেপর বিষয়ে বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তরে পর্বে ‘মিডিয়া মনিটরিং সেন্টার’ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তবে এটা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধ করবে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “ইতিমধ্যে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমেও গণমাধ্যমকে গলা টিপে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

“এমনকি দেশীয় গণমাধ্যমের বিকাশের নামে বিদেশি গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণের সার্বিক উদ্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে- এসব আলামত শুভ লক্ষণ নয়।”

সরকার নিজের অনাচার ও দুর্নীতি চাপা দিতেই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “সমালোচনার অগ্নিবাণ থেকে নিজেদেরকে অবধ্য ও অনিন্দ রাখার জন্যেই মিডিয়া সেল করা সরকারের এটি মরিয়া প্রয়াস।”

তথ্যমন্ত্রীর ইনুর সমালোচনা করে রিজভী তিনি বলেন, “ইনুর কাছ থেকে জনগণের পক্ষে কোনো আইন হবে- এটা কেউ আশা করতে পারে না। কারণ তার রাজনীতির শুরুটাই হচ্ছে, রাজনীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড দিয়ে, সন্ত্রাস দিয়ে, নাশকতা দিয়ে।

“যখন দেশে গণতন্ত্র থাকবে না, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে না, মানুষের অধিকারগুলো সম্পূর্ণ বিলোপ করা হবে, তখনই হচ্ছে ইনুদের পোয়াবারো। অর্থাৎ তারা অন্ধকারের রাজনীতি করেন, তারা অন্ধকারের রাজনীতিবিদ, তারা দিনের আলোর রাজনীতিবিদ নন। এদের কাছ থেকে কখনোই জনগণের পক্ষে আইন প্রণয়ন হতে পারে না।”

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ফের রিমান্ডে নেওয়ায় সমালোচনা করে অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবিও জানান তনি।

সংবাদ সম্মেলনে গৃহস্থালি ও যানবাহনের জন্য গ্যাসের দাম আরও বাড়ানোর ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে সেই উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান রিজভী।

অন্যদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, হারুনুর রশীদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক মিয়া, কেন্দ্রীয় নেতা জামাল শরীফ হীরু, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিনুল ইসলাম ও আশরাফুর রহমান এসময় উপস্থিত ছিলেন।