বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচির রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “তিনি একজন অ্যাকাডেমিশিয়ান, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ। তাকে কেন ওই যুদ্ধাপরাধের মামলার সাথে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? উনি যাতে দেশে-বিদেশে বিএনপির পক্ষে কথা বলতে না পারেন- এই কারণে।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বুধবার সাংবাদিকদের জানান, ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন– এমন ১১ জনের একটি তালিকা ধরে তদন্ত করছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার এগ্রিকালচার ইকোনমি অনুষদের রিডার ওসমান ফারুকের নামও সেখানে রয়েছে।
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতের জোটসঙ্গী বিএনপি বলে আসছে, আওয়ামী লীগ সরকার ‘যুদ্ধাপরাধীদের চারের নামে’ আসলে বিরোধী মতাবলম্বীদের ‘ধ্বংসের ষড়যন্ত্র’ করছে।
তদন্ত সংস্থার পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, “স্তব্ধ করে দাও, চুপ করিয়ে দাও, সাইলেন্স করে দাও কণ্ঠস্বর। কণ্ঠ রোধ কর যেভাবে পার। এক দিকে সম্প্রচারকে সামগ্রিকভাবে, আর যারা বিরোধী দলের পক্ষে কথা বলে তাদের নানাভাবে হেয় কর।
“এর সর্বশেষ শিকার হলেন ওসমান ফারুক। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার কাউন্সিলের সদস্য। আমি সরকারের এই ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য ওসমান গণির ছেলে ওসমান ফারুক ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা।
তবে যুদ্ধাপরাধের অন্য মামলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর ‘টর্চার সেল’ থাকার কথা এসেছে।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এর আগে চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানকেও ‘ভয় দেখাতে গুলি করা হয়েছিল’।
“ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধেও সেরকম করা হল। তার শত্রুরাও বিশ্বাস করবেন না...। কীসের মানবতা বিরোধী, কিসের যুদ্ধাপরাধের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন?
“তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, বিশ্ব ব্যাংকে চাকরি করেছেন। কেউ কোনোদিন তার কোনো বিষয় জানল না, জানল এই সরকার। এটাই রহস্যজনক,” বলেন রিজভী।