যুদ্ধাপরাধী নিজামীর জন্য জামায়াতের হরতাল

যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেওয়ার পর হরতাল ডেকেছে তার দল একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2016, 07:22 AM
Updated : 8 May 2016, 03:17 AM

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের রায়ের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার হরতালের বার্তা দেওয়া হয়, যা জামায়াতের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, “সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার উদ্দেশ্যেই এই সংগঠনের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক।”

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ‘ডিসমিসড’ বলে নিজামীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেন।

জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, “মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শহীদ নেতৃবৃন্দের সহকর্মীরা হত্যার বদলে হত্যা নয়, ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়ন করেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বদলা নেবে ইনশাআল্লাহ।”

দলের আমির নিজামীর মুক্তির দাবিতে ৮ মে রোববার সকাল ৬টা থেকে ৯ মে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত হরতালসহ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, শুক্রবার দেশজুড়ে ‘দোয়া দিবস’ ও শনিবার ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ’ করবে জামায়াত।

এর আগে ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধ মামলার সব রায়ের পরও হরতাল করে জামায়াত। প্রথম দিকে এসব কর্মসূচিতে সারা দেশে সারা দেশে ব্যাপক নাশকতা চালানো হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হরতালের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যায়নি, জনজীবনেও তেমন প্রভাব পড়েনি।

মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের পর যুদ্ধাপরাধী নিজামীর শেষ আইনি সুযোগ ছিল এই রিভিউ আবেদন। কিন্তু আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেওয়ায় তার সামনে আছে কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ। তিনি তা চাইলে বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না পেলে সরকার দণ্ড কার্যকর করবে।

এর আগে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মো. কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

চলতি বছর ৬ জানুয়ারি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সেই ফাঁসির রায়ই বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত।

আপিলের রায়ে বলা হয়, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রাণদণ্ডই হতে পারে তার একমাত্র সাজা।