ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করুন: হাসিনাকে খালেদা

কথিত ৩০ কোটি ডলার নিয়ে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2016, 04:34 PM
Updated : 1 May 2016, 04:34 PM

জয়ের প্রাণনাশের চক্রান্তের মামলায় বিএনপিঘনিষ্ঠ সম্পাদক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মে দিবসের সমাবেশে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।

জয়ের বিষয়ে তথ্য পেতে এফবিআইয়ের এক এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ায় প্রবাসী এক বিএনপির নেতার ছেলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মামলার প্রসঙ্গ ধরে একদিন আগে আরেক সমাবেশে খালেদা বলেছিলেন, “সেই মামলার নথিতেই আছে প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের একটি একাউন্টেই আড়াই হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ডলার জমা আছে। এই টাকার কোথা থেকে গেছে? এই টাকার উৎস কী?”

রোববার সমাবেশ মঞ্চে টাঙানো শফিক রেহমানের মুক্তির দাবিতে পোস্টার দেখিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “শফিক রেহমান কোনো রাজনীতি করেন না। তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল কেন? তার দোষটা কী ছিল? দোষটা ছিল- প্রধানমন্ত্রীর পুত্র... কী যেন নাম?”

উপস্থিত বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ সময় ‘চোর চোর’, ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে আওয়াজ দিতে থাকেন।

খালেদা বলেন, “আদালত তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) অ্যাকাউন্টে তিনশ মিলিয়ন ডলার, আড়াই হাজার কোটি টাকা নিয়ে সন্দেহ করেছে। এফবিআই এই টাকা তদন্ত করে পেয়েছে। এখানে শফিক রেহমানের দোষটা কোথায়? তাকে গ্রেপ্তার করে এখন নাটক চলছে।”

শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করে খালেদা সরকারপ্রধানের উদ্দেশে বলেন, “আপনি তাদেরকে যদি মুক্তি না দেন, আপনি যদি সত্যি সত্যি দেশের মানুষের প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন, তাহলে এই যে ৩০০ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ আড়াই হাজার কোটি টাকা আপনার ছেলে জয় কোথা থেকে পেল, তাকে ভেতরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। ওই অর্থগুলো কি বৈধ?”

এই ঘটনা ‘চাপা দেওয়া যাবে না’ বলেও আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ার করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এদিকে খালেদা জিয়ার শনিবারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তার কাছেই কথিত ওই অর্থের উৎস বিষয়ক তথ্য জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয়।

সজীব ওয়াজেদ জয়

খালেদা জিয়াকে ‘চোর ও মিথ্যাবাদী’ আখ্যায়িত করে তিনি রোববার ফেইসবুকে লিখেছেন, “একজন মহিলা, যিনি এতিমের টাকা চুরি করেছেন, যার ছেলে দুর্নীতির কারণে এফবিআই কর্তৃক পলাতক আসামি, তার মতো লোকের অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর নাতির দিকে কাদা ছোড়া উচিত নয়।”

কোনো ধরনের দুর্নীতিতে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় বলেছেন,“আপনার (খালেদা) পোষা ভৃত্য মাহমুদুর রহমান এবং শফিক রেহমান এফবিআই এর গোপন নথি চুরি করে আমার সব ব্যাংক হিসাবের তালিকা পেয়েছে, কিন্তু সেই টাকা খুঁজে পায়নি। ১/১১ এর সামরিক শাসকেরা যারা আমার মাকে আটক করেছিল, তারাও সেটি খুঁজে পায়নি।

“এমনকি এফবিআই সেটি পায়নি। এটা এজন্য যে, আমি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছিও কোনো সম্পদ কোনোদিন অর্জন করিনি। আমি তত ধনী নই।”

খালেদা জিয়া সমাবেশে বক্তব্যে আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ৭ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, “কথায় কথায় উন্নয়ন বলে। কী উন্নয়ন তারা করেছে? যতো উন্নয়ন করেছে তার বেশি তারা চুরি করেছে।”

পানামা পেপারসে যাতে ‘নাম না আসে’, সেজন্য ক্ষমতাসীনরা এখন ‘ধরাধরি’ করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।