মে দিবসের শিক্ষায় আন্দোলনের আহ্বান খালেদার

মে দিবসের শিক্ষা নিয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2016, 11:47 AM
Updated : 1 May 2016, 01:13 PM

রোববার জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে তিনি বলেন, “মে দিবস রক্ত দিয়ে অধিকার আদায়ের ইতিহাস। মে দিবসের শিক্ষা নিয়ে আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে।”

খালেদা জিয়া দাবি করেন, তার সরকারই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছে; বর্তমান সরকার কিছুই করেনি।  

বর্তমান সরকার ‘জোর করে’ ক্ষমতায় বসে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে তারা মনে করে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।”

খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সকল দল ‘বন্ধ করে’ দিয়ে ‘একদলীয় শাসন’ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। 

“তারা নতুন নতুন আইন তৈরি করছে, যাতে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে।”

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ‘কখনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না’ মন্তব্য করে বিএনপিনেত্রী বলেন, “হাসিনা যে রকম, নির্বাচন কমিশনও সেই রকম।”

সরকারের সমালোচনায় খালেদা বলেন, “কথায় কথায় উন্নয়ন বলে। কী উন্নয়ন তারা করেছে? যতো উন্নয়ন করে তার বেশি তারা চুরি করে।”

খালেদা জিয়া বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই শ্রমিক সমাবেশে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।  বিএনপি নেত্রী হাত নেড়ে অভিনন্দনের জবাব দেন।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বেলা দেড়টার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়। নেতাকর্মীরা দলে দলে সমাবেশস্থলে হাজির হতে থাকেন দুপুর থেকেই।

সমাবেশ উপলক্ষে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা। 

সভামঞ্চের সামনেই বড় হরফে লেখা দেখা যায়- ‘আমি একজন শ্রমিক এবং এ পরিচয়ে আমি গর্বিত’। উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা, শ্রমিক দলের পতাকা ও লাল পতাকা।

এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে উদ্যান এলাকায় মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউশন মিলনায়তনে পুলিশের জলকামাল, প্রিজন ভ্যানও প্রস্তুত দেখা যায়।

এর মধ্যেও খালেদা জিয়া পৌঁছানোর ঘণ্টাখঅনেক আগে মঞ্চের পশ্চিম দিকে সামনের অংশে বসা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে পানির বোতল ছোড়াছুড়ি হয়। পরে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আসম হান্নান শাহ, জমিরউদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জয়নুল আবেদীন, এজেডএম জাহিদ হোসেন, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম, শ্রমিক দলের শাহ মো আবু জাফর, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, আনিসুর রহমান হীরা, বদরুল আলম সবুজ, সুমন ভুঁইয়া, কাজী শাহ আলম রাজা, মাহবুব আলম বাদল, খন্দকার জুলফিকার মতিন, কাজী আমির খসুর, খোরশেদ আলম, কোহিনুর মাহমুদ, ফজলুল হক মোল্লা, জাকির হোসেন, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মেহেদি আলম খান, আবুল কাশাম আহাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন।

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের নুরী আরা সাফা, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মীর সরফত আলী সপু, ছাত্র দলের রাজীব আহসান বক্তব্য দেন এ সমাবেশে।

বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, হারুন আল রশীদ, ড. ওসমান ফারুক, শাহজাহন ওমর, আবদুল মান্নান, আহমেদ আজম খান, মাহবুবউদ্দিন খোকন, নাজিমউদ্দিন আলম, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, শামা ওবায়েদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।   

কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দল গোছানোর প্রক্রিয়া শুরুর পর এই প্রথম নেতা-কর্মীদের সামনে এলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা।

নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে গতবছর ৫ জানুয়ারি থেকে তিন মাসের টানা হরতাল-অবরোধের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর কোনো সমাবেশ হয়নি বিএনপির। ঐতিহাসিক এই উদ্যানে খালেদার সর্বশেষ সমাবেশ হয় ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি।

আর নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিন এ বছর ৫ জানুয়ারি নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জনসভায় বক্তৃতা করেন খালেদা জিয়া।