মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এখন রিমান্ডে নিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য শফিক রেহমানের মতো বরেণ্য গুণী মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে-এই খবরে শুধু বিএনপি উদ্বিগ্ন নয়, এ খবরে উদ্বিগ্ন সারা দেশবাসী। এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন বিশ্ব সমাজ।
“অসুস্থ শফিক রেহমানকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনে তার জীবন নিয়ে স্ত্রীর মতো আমরাও আশঙ্কা প্রকাশ করছি।”
যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ চক্রান্তের মামলায় গ্রেপ্তার শফিক রেহমানের দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড চলছে।
রিমান্ডের নামে ‘নির্যাতনে’ শফিক রেহমানের জীবনহানির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তার স্ত্রী তালেয়া রহমানও। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলন করে স্বামীর মুক্তি দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রসঙ্গ টানেন।
তিনি বলেন, “সাংবাদিক শফিক রেহমান, ৮২ বছর বয়স, একটি প্রতিষ্ঠান, বরণ্যে গুণীজন, একজন দক্ষ কলামনিস্ট, লেখক। আমরা গতকাল থেকে শুনেছি, তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
“স্ত্রী বলেছেন, শফিক রেহমান গুরুতর অসুস্থ। এটি জানানোর পরও গ্রেপ্তারের পর থেকে তাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি। আমরা তার জীবন নিয়ে শঙ্কিত।”
শফিক রেহমানের লেখার প্রতি ভালোলাগার কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “আজকের এই সভ্যতার যুগে, আজকে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে, আজকে গ্লোবাল ভিলেজের যুগে, শফিক রেহমানের মতো একজন অনন্য সাংবাদিক তার কলাম পড়ার জন্য সেই ছাত্র জীবন থেকে আমরা উন্মুখ হয়ে থাকতাম।
“যে ব্যক্তিটি গোলাপ ফুল ছিটিয়ে ভালোবাসার কথা বলেছেন, তাকে আজকে অপরাধী বানানোর যে হীন কৌশলে চেষ্টা করছেন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। এর নিন্দা, ঘৃণা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নেই।”
শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে যে মামলাটি হয়েছে, সেখানে অপহরণ এবং হত্যার চেষ্টার কোনো মামলা নেই। এটি একটি ঘুষের মামলা। তার সঙ্গে নাম গন্ধ নেই শফিক রেহমানের।
“অথচ একটা ভয়ঙ্কর রকমের চক্রান্ত করে তাকে ধরার জন্য আগে থেকেই একটা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই পরিকল্পনার পথে হেটেই তাকে এখন নির্যাতন করা হচ্ছে।”
জয় অপহরণ চক্রান্তের মামলায় ‘আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জড়ানোর নিন্দা জানান রিজভী।
“সরকারের নির্দেশে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে এই মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। অর্থাৎ সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে যারা লেখেন, যাদের শানিত লেখনিতে মানুষ জাগ্রত হয়, এই জাগরণী লেখা যারা লেখেন, বলেন- তাদের স্তব্ধ করে দিতে হবে।
“এই স্তব্ধের প্রক্রিয়ায় চলছে শারীরিক নির্যাতন। যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন শফিক রেহমান, হতে যাচ্ছেন মাহমুদুর রহমান। এখনো যদি আমরা চুপচাপ থাকি, আমার-আপনার সন্তানদের কারো কোনো নিরাপত্তা থাকবে না।”