‘গায়ের জোরে’ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র: রিজভী

প্রতিবেশী দেশকে ‘খুশি’ রাখতেই সরকার সুন্দরবনের কাছে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2016, 09:54 AM
Updated : 13 Feb 2016, 10:47 AM

শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “ভারতেও একটা ব্যাপক অংশজুড়ে সুন্দরবন আছে। সেখানেও কিন্তু তার কাছাকাছি স্থানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কথা হয়েছিল। জনগণের প্রতিবাদে ভারত সেটা করেনি। কিন্তু গায়ের জোরে বাংলাদেশে সুন্দরবনের কাছে এটা (বিদ্যুৎকেন্দ্র) করতেই হবে।”

সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় মিলনায়তনে ‘সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের’ উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।

সুন্দরবনের কাছে ভারি শিল্প কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “এতে বিশ্বখ্যাত এই বনের জীব-প্রাণ বৈচিত্রের চরম ক্ষতি হবে, পানি দুষিত করবে, মূলত গোটা এলাকার ক্ষতি হবে।

“রামপালের প্রকল্প প্রধামন্ত্রী চান বলেই হচ্ছে। এখানে আইনগত দিক থেকে শুরু করে সবকিছু সম্পন্ন করেছে সরকার। করতেই হবে, কারণ না করতে পারলে ভারতের সঙ্গে গভীর প্রেমে ঘাটতি পড়ে যাবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যে নীতি, সেখানে যদি দেখি বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে, সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে- তাহলে কি দেশের মানুষ তার প্রতিবাদ করবে না? নিশ্চয়ই করবে। আমরা সেটিই বলি- আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে নই।”

“জনগণের সংঘবদ্ধ আন্দোলন বা সম্মিলিত প্রয়াস হলে যতবড় ফ্যাসিবাদী সরকার হোক না কেন, তাদের কোনো কিছু সফল হবে না। আপনারা একদিকে আন্দোলন ও অন্যদিকে গবেষণা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে দেশের সম্পদকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান।”

ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের নাম উল্লেখ না করে রিজভী বলেন, “ওয়ান ইলেভেনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

“একবছর তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তার দুই ছেলেকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সেটার জন্য কিন্তু দুঃখ প্রকাশ করেননি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদক। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী জেলে গেছেন, তার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য।”

বিএনপিনেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী অভিযোগ করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল  সাহেব, আমরা কাছে মনে হয়, ব্যক্তিগতভাবে বোধ হয় খুব অসুখী মানুষ। অন্যকে নির্যাতন করে নিজে আনন্দ লাভ করেন।

“…সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অপেক্ষা করে থাকেন, বিচারকরা জামিন বাতিল করছেন কিনা, আটকাদেশটা বহাল রাখছেন কিনা- এর জন্য যত ধরনের প্রক্রিয়া, সেটা তিনি করেন। এমনকি আদালতের রায় উপেক্ষা করে তার অফিস থেকে জেলখানায় বলে দেওয়া হয় যে ‘আমাদের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা ছাড়বেন না’।”

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রমুখ।