মাহমুদুরের মুক্তিতে বাধা অ্যাটর্নি জেনারেল: রিজভী

অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের ‘বাধার’ কারণে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2016, 04:29 PM
Updated : 10 Feb 2016, 04:29 PM

মাহমুদুর সরকারের ‘জুলুমের শিকার’ দাবি করে বুধবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

এদিকে বিএনপি নেতার এই বক্তব্যকে ‘আদালত অবমানননার শামিল’ বলেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম।

রিজভী বলেন, “প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মাহমুদুর রহমান আজ সরকারের সীমাহীন জুলুমের শিকার। তার বিনা অপরাধে বন্দি থাকার আজ ১০৩৫ দিন অর্থাৎ তিন বছর হয়ে গেছে। উচ্চতর আদালত থেকে তার সবগুলো মামলায় জামিন হয়েছে এবং আদালত থেকে জামিননামাও যথারীতি কারাগারে পৌঁছানো হয়েছে। কিন্তু তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।”

অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের দিকে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেলের কাজই হচ্ছে জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা যাতে জেল থেকে বের হতে না পারেন, অনবরত তার চেষ্টা করা।

“আমরা যখন কারাগারে ছিলাম, আমরা দেখেছি, জামিন হয়ে গেছে। শুনতে পারছি, কালকেই আমরা ছাড়া পাবে। হঠাৎ অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে বলে দেওয়া হয়, অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডস কে একজন আছেন, বলে দেওয়া হয় জেলারকে- ‘আমাদের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা ছাড়বেন না’। অর্থাৎ উচ্চতর আদালতকেও অবজ্ঞা করেন তারা (অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়)।”

তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি শুনে আদালত মামলা নিষ্পত্তি করে না, উভয় পক্ষের শুনানি নিয়েই আদালত আদেশ দিয়ে থাকেন।

“রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তিতে জামিন হচ্ছে না-এটা আদালতের প্রতি অনাস্থা ও আদালত অবমাননাকর।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার মুক্তিও দাবি করেন রিজভী।

প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় খালেদা জিয়ার জ্বালানি উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মাহমুদুর পরে আমার দেশের মালিকানা নিয়ে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।

বিতর্কিত নানা প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্যে ২০১৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি কারওয়ান বাজারে আমার দেশ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে পুলিশ আটক করে। তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনসহ বিভিন্ন আইনে ৭০টি মামলা রয়েছে।

রিজভী বলেন, “মাহমুদুর রহমানের সর্বশেষ মামলার জামিননামা ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। নিয়মানুযায়ী শুক্রবার তার মুক্তি পাওয়ার কথা। তারপরও সরকার একটি মানহানি মামলায় প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার না করার অজুহাত দেখিয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে আটকে রেখেছে।”

সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, নগর সম্পাদক ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহও ছিলেন।