বিচারপতি শামসুদ্দিন আদালতকে ‘বিতর্কিত’ করছেন: বিএনপি

খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 08:18 AM
Updated : 9 Feb 2016, 10:10 AM

দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগে বলেছেন, ‘বিচারবুদ্ধিহীন’ মন্তব্য করে আপিল বিভাগের সাবেক এই বিচারক উচ্চ আদালতকে ‘বিতর্কিত’ করছেন।

“তার কথা শুনলে মনে হবে কোনো কসাই কথা বলছে। একজন বোধ, বুদ্ধি, বিচার সম্পন্ন মানুষের কথা এটি নয়,” বলেন রিজভী।

প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পূর্তিতে গত ১৭ জানুয়ারি এক বাণীতে বিচারপতি এস কে সিনহা অবসরে যাওয়ার পর বিচারকদের রায় লেখাকে ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বললে নানামুখি আলোচনার সূত্রপাত হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও বিএনপি নেতারা তাতে জোর সমর্থন দিয়ে বলে আসছেন, বিচারকের অবসরের পরে লেখা হওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায়ও ‘অবৈধ’ প্রমাণিত হয়েছে।

এরমই মধ্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন তার অবসরের পর লেখা রায় ও আদেশ জমা দিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা রায় লিখতে পারবে না… এই কথা বহু আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন। উনি (প্রধান বিচারপতি) খালেদা জিয়ার মুখপাত্র হয়ে বিএনপির এজেন্ডা চরিতার্থ করার জন্য এটা বলেছেন। উনার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।”

এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “এই দেশে বৃটিশ আমল থেকে উচ্চতর আদালত এতো বিতর্কিত ও অশ্রেদ্ধয় হয়ে পড়েনি আর কখনো। একে বিতর্কিত করেছেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও খায়রুল হকরা।

“আজ যখন তার নোংরা অপকর্মগুলো উদ্ভাসিত হচ্ছে, আজকে যখন মাননীয় প্রধান বিচারপতি আইনের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে, আইনের শাসনের পক্ষে কথা বলছেন, তখন তিনি সহ্য করতে পারছেন না। পারছেন না বলেই এসব কথা বলছেন।”

‘বিচারপতি শামসুদ্দিনের মতো ব্যক্তিরা’ অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থান আদালতকে ‘আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর কর্মসূচি বাস্তবায়নের কেন্দ্রে’ পরিণত করতে চান বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা। 

“সেটা সম্পূর্ণভাবে করতে পারছেন না, তাই খেদ থেকে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন।

“প্রধান বিচারপতি যদি খালেদা জিয়ার মুখপাত্র হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি কার মুখপাত্র ছিলেন? আপনি কার মুখপাত্র ছিলেন- এটা তো গোটা দেশবাসী জানে,” বিচারপতি শামসুদ্দিনের উদ্দেশে বলেন রিজভী। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে ‘একমাত্র মৃত মানুষ ছাড়া’ আর কারও কথা বলার স্বাধীনতা নেই।

“স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্যই মাহমুদুর রহমানের মুক্তি হচ্ছে না,” বলেন রিজভী।

এমকে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, শওকত মাহমুদ, আবদুল মান্নান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ বিএনপির কারাবন্দি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, কাজী আবুল বাশার, বেলাল আহমে, রফিক শিকদার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।