সোমবার দলীয় এক কর্মসূচিতে স্ত্রী রওশনের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, “নতুন প্রজন্মের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিন। আমাদের দিন শেষ হয়ে গেছে।”
বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য আলোচিত সাবেক এই সামরিক শাসক দলের কো চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পদে সাম্প্রতিক রদবদলের সিদ্ধান্তে ‘অটল’ থাকার কথা বলেছেন আবারও।
পাশাপাশি জাতীয় পার্টিতে ‘রওশনপন্থি’ নেতা হিসেবে পরিচিতদের ‘দলে কোনো অবস্থান নেই’ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
রোববার সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় নেতার কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির ৩১ জন এমপির এক বৈঠক থেকে দলের চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে তিনটি দাবি জানানো হয়।
তাদের দাবি- কো চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদের ও মহাসচিব পদ থেকে রুহুল আমিন হাওলাদারকে প্রত্যাহার করতে হবে; রওশন এরশাদকে দলের কো চেয়ারম্যান করতে হবে এবং প্রেসিডিয়াম ও পার্লামেন্টারি কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করে দলের চেয়ারম্যান কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।
এই দাবিগুলো পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত দলের কোনো কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে। ওই সভার সভাপতি ছিলেন রওশন।
সোমবার গুলশানের একটি কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির আঞ্চলিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক যৌথ সভায় ‘রওশনপন্থী’ নেতাদের ইঙ্গিত করে এরশাদ বলেন, “একটি দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো শৃঙ্খলা। এটা যারা ভঙ্গ করেছে, তাদের পরিণতি তোমরা দেখেছ। তারা জানে যে তৃণমূলে তাদের কোনো অবস্থান নেই। আমাদের কাছে তাদের কোনো মূল্য নেই।”
যৌথ সভায় উপস্থিত নেতা কর্মীদের পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, “তিন বছর আগে বর্ধিত সভা হয়েছিল, আর দুই বছর আগে প্রেসিডিয়াম বৈঠক। একটা দল বাঁচে কী করে! এখনো যে জাতীয় পার্টি আছে তার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ তোমাদের।”
বর্জনের হুমকি দেওয়া ‘রওশনপন্থি’ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আসুন, এসে দেখে যান, এই সভা কেমন হচ্ছে, কারা কারা এসেছে এখানে।”
নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে দলে ‘প্রাণ ফিরে আসছে’ মন্তব্য করে এরশাদ বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত। আমার মৃতপ্রায় সন্তান আজ প্রাণ ফিরে পেয়েছে, সামনে এগিয়ে চলছে। আমি এ দলের পিতা, আমার চেয়ে বেশি আনন্দ আর কে পেতে পারে? আমার সব পাওয়া হয়ে গেছে।”
কো চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পদে পরিবর্তনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “মুক্ত মানুষ ছিলাম না, এখনো নই। তবে আমি যোগ্য উত্তরসূরি নির্বাচিত করেছি। সে আমার ছোট ভাই। আমার বয়স হয়েছে, বেশি দিন বাঁচব না। সে আমার দলের হাল ধরতে পারবে।
“জীবন থাকতে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না।”