সোমবার বেলা দেড়টার দিকে সদরঘাট এলাকায় এঘটনায় একজন ছুরিকাহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে আয়োজকদের দুই পক্ষ এই সংঘর্ষে জড়ায়। তবে আয়োজকরা তাদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ করেছেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মিজানুর রহমান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে সদরঘাট মোড়ে সাংসদ এম এ লতিফের বিরুদ্ধে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল।
“সেখানে মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে আয়োজকদের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এতে একজন ছুরিকাহত হয়েছেন। আর তিনজন সামান্য আহত হয়েছেন।”
পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে জানিয়ে তিনি বলেন, “নেপথ্যে অন্য কিছু আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
অন্যদিকে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুজন বর্মন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মানববন্ধন শেষে ফেরার পথে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কারা হামলা করেছে তা আমরা জানি না।”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক পঙ্কজ বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছুরিকাহত মো. রাশেদ (২৩) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাশেদ কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
জাগ্রত ছাত্র যুব জনতা মাদারবাড়ি শাখার উদ্যোগে সোমবার বেলা দেড়টার দিকে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এই সংগঠনের ব্যানারে এর আগেও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংসদ লতিফের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করা হয়, যাতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ নেতাদের অংশ নিতে দেখা গেছে।
গত শনিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরের আগে লতিফের নির্বাচনী এলাকায় (বন্দর, কাঠগড় ও পতেঙ্গা) সড়কের পাশে কয়েক ডজন বিলবোর্ড লাগানো হয়।
এসব বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধুর দাঁড়ানো অবস্থার একটি ছবি এবং এম এ লতিফের নামে দেওয়া বক্তব্য ছিল।
কিন্তু ওই ছবি নিয়ে ফেইসবুকে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। বলা হয়, ছবির দেহাবয়ব, পাজামা ও জুতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
চট্টগ্রামের ছাত্র ও যুবলীগের একদল নেতা-কর্মী বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পাশাপাশি ‘জামায়াত ঘনিষ্ঠ’ লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে। এরপরই মামলা হয়।
বিলবোর্ড-ফেস্টুনে ছবি বিকৃত করে জাতির জনকের অবমাননা করায় লতিফের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগটি করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রহিম জিল্লু।
সেদিন চট্টগ্রামের আরেকটি আদালতে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন সাবেক যুবলীগ নেতা সাইফুদ্দিন রবি। ওই মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
লতিফের বিরুদ্ধে করা আবদুর রহিম জিল্লুর মানহানির মামলার তদন্ত করতে রোববার পুলিশের তদন্ত ব্যুরোকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত।
একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে এক সময়কার জামায়াতঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য ছবি বিকৃতির কথা স্বীকার করে বলেছেন, ফেস্টুনে তার দেহাবয়বের ওপরে বঙ্গবন্ধুর মাথা বসানো হয়েছে।
এর জন্য তার বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপনী সংস্থার এক ডিজাইনারকে দায়ী করেন, যিনি সাংবাদিকদের কাছে দায় স্বীকারও করেন।